নয়া দিল্লি: পঞ্জাবের (Punjab) মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ। কিন্তু কংগ্রেসের (Congress) হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে তোপ দাগা বন্ধ করছেন না ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং (Amarinder Singh)। পঞ্জাবের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার আবারও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও রাখঢাক না করেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্জাবের শোচনীয় পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে একের পর এক মিথ্যা বলছেন নেতারা। তাঁর কথায়, সংগঠনে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে সেটা ঢাকতে “দলীয় নেতারা তাঁদের ভুল কাজগুলিকে একের পর এক মিথ্যার সাহায্যে আড়াল করছেন।” পঞ্জাবে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা হরিশ রাওয়াত ও কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা রণদীপ সুরযেওয়ালার তালমেলের অভাবই সেই বিষয়টা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বলে ক্যাপ্টেন দাবি করেন।
ঘটনা হচ্ছে, গতকালই কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরযেওয়ালা দাবি করেন, কংগ্রেসের ৭৯ জন বিধায়কের মধ্যে ৭৮ জনই অমরিন্দরের অপসারণ চেয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি লিখেছেন। “কিন্তু তার আগের দিনই হরিশ রাওয়াত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, এই ইস্যু নিয়ে নাকি ৪৩ জন বিধায়ক হাইকমান্ডকে চিঠি দিয়েছেন”, বলেন ক্যাপ্টেন। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্যেই যেভাবে অসামঞ্জস্য ধরা পড়ছে, তা আসলে একপ্রকার হাস্যকর ভুল বলে আখ্যা দেন অমরিন্দর। সেই সঙ্গে নভজ্যোৎ সিং সিধুকে একহাত নিয়ে গোটা দলের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে পুরো দলটাই সিধুর নাটকের ধাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোনদিন ওঁদের বলতে শুনবেন, “পঞ্জাব বিধানসভার ১১৭ জন বিধায়কই আমার বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছে।”
দলীয় নেতৃত্বকেই একের পর এক বাণে বিদ্ধ করেছেন ক্যাপ্টেন। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “এই হচ্ছে দলের অবস্থা, যেখানে মিথ্যাটাও সবাই একভাবে গুছিয়ে বলতে পারে না।” যে ৪৩ জন তাঁর অপসারণ চেয়ে হাইকমান্ডকে চিঠি দিয়েছেন, তাঁরাও চাপের মুখে সেই কাজটা করতে বাধ্য হয়েছেন বলেও দাবি অমরিন্দরের। রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব যদিও আগাগোড়াই অমরিন্দরের সমস্ত দাবিকে নাকচ করে এসেছে। সেই ধারা এখনও অব্যাহত। পঞ্জাব কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান হরিশ রাওয়াত বলেছেন, “বলা হচ্ছে ওঁকে নাকি অপমানিত হতে হয়েছিল! আমি আবারও পরিষ্কার করে দিতে চাই দল ওঁকে সর্বদা সমীহ করেছে এবং সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রাখা হয়েছে।”
এত বাদানুবাদ সত্ত্বেও অমরিন্দরের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা বেড়েই চলেছে। কারণ, সবাইকে কার্যত চমকে দিয়েই তিনি দিনদুয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেন। যার পর থেকেই ক্যাপ্টেন বিজেপির দিকে ঝুঁকবেন কিনা, সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র আবার জানিয়েছেন, সমস্ত বিকল্পই খোলা রাখছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কাজেই কখন কী হয় বলা খুব কঠিন। ক্যাপ্টেন নিজে যদিও শাহি সাক্ষাতের পরই একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। তা হল- এই সাক্ষাৎ ছিল শুধুই কৃষি আইন নিয়ে কথা বলার জন্য। রাজনীতির কোনও আলোচনা সেখানে হয়নি।