নয়া দিল্লি: কেদারনাথের ঘটনার আট বছর পর ফের বিপর্যয় উত্তরাখণ্ডে। হিমবাহ ভেঙে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে একের পর এক গ্রাম। এখনও বেরিয়ে আসছে মৃতদেহ। এখন কী পরিস্থিতি, কোন পথে এগোচ্ছে উদ্ধারকাজ তা নিয়েই মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বিবৃতি দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এ দিন তিনি জানিয়েছেন, সরকারি হিসেবে ২০ জনের মৃত্য়ুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টা নজর রাখছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ঘটনাস্থলে রয়েছে সেনাবাহিনীর ৮ টিম, এনডিআরএফের ৫ টি টিম, এসএসবি-র ১ টি টিম। এছাড়া একটি ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্ক ফোর্স টিম ও নৌবাহনীর টিমও মোতায়েন রয়েছে। ১৩ টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বলেও জানিয়েছেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দুস্তানি মুসলিম হতে পেরে গর্বিত’, নমোর আবেগে আপ্লুত কংগ্রেসের আজ়াদ
আশ্বস্ত করে অমিত শাহ বলেন, “তৎপরতার সঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। উত্তরাখণ্ডে সরকার জানিয়েছে নীচু এলাকায় বন্যার কোনও সম্ভাবনা নেই, বেশির ভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।” পাঁচ সেতুর মেরামতের কাজও চলছে বলে জানান অমিত শাহ। জোশীমঠে খোলা হয়েছে দুটি কন্ট্রোল রুম।
ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে প্রাণের খোঁজ চলছে দিন রাত, মঙ্গলবার সকালেও দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও খোঁজ নেই কমপক্ষে ১৯৭ জনের। উদ্ধারকারীদের ধারণা, সুড়ঙ্গে আটকে থাকতে পারেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। তাঁদের সন্ধানে স্নিফার ডগ নামানো হয়েছে সুড়ঙ্গে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। ত্রাণের জন্য ইতিমধ্যেই কুড়ি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: তুষারধস নয়, জোশীমঠ বিপর্যয়ের অন্য কারণ জানাল ইসরো
ইতিমধ্যেই সুড়ঙ্গের অনেকটা অংশ থেকে কাদা মাটি সরানো সম্ভব হয়েছে। রাত আড়াইটে নাগাদ ১৮০ মিটারের মোড় পর্যন্ত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সুড়ঙ্গ। কাদামাটি-পাথরের স্তূপের উচ্চতা কমানো গিয়েছে বেশ খানিকটা। সাফাইয়ের কাজ জোরকদমে চালিয়ে আরও ভিতরে এগোনোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। তবে উদ্ধারকারীদের কথায়, এখনও বিপদের বাকি আছে। আগামী ৮০ থেকে ৯০ মিটার পথ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি তাঁদের। সেখানেই আরও বেশি সংখ্যক মানুষ আটকে থাকতে পারেন।
তপোবনে প্রায় ১৯০০ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গ পথ। সেখানেই আরও বহু মানুষের আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। চামোলি, ঋষিগঙ্গার তুমুল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে এই এলাকা। জলস্তর ৭০ ফুট অবধি বেড়েছে। কাদা মাটিতে আটকে পড়েছে সুড়ঙ্গের পথ। জেসিবি মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গের পথ পরিষ্কার করে এগিয়ে যাচ্ছে আইটিবিপি।