নয়া দিল্লি: ২০২১ সালের অন্যতম ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা হিসাবে মনে থাকবে প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত(Bipin Rawat)-র হেলিকপ্টার (Army Chopper Crash) ভেঙে পড়ার ঘটনা। গত ডিসেম্বর মাসে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে সামরিক হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত সহ ১৪ জনের। কীভাবে ঘটেছিল সেই দু্র্ঘটনা, তা নিয়ে একাধিক তত্ত্ব উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে, তবে নির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি এখনও। প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াতের কপ্টার দুর্ঘটনার কারণ জানতে যে তদন্ত শুরু হয়েছিল, তার বিস্তারিত তথ্য আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং(Rajnath Singh)-কে জানাবেন বায়ুসেনার আধিকারিকেরা। বুধবার সকাল ১১টায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা বায়ুসেনার আধিকারিকদের।
গত ৮ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুর কুন্নুরের জঙ্গলে ভেঙে পড়ে সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত(Bipin Rawat)-র হেলিকপ্টার। ওই হেলিকপ্টারে ছিলেন বিপিন রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত ও ১২ জন সেনা আধিকারিক। দুর্ঘটনায় ১৩ জনেরই মৃত্যু হলেও একমাত্র রক্ষা পেয়েছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং। এক সপ্তাহ পরে বেঙ্গালুরুর কম্য়ান্ড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
সূত্রের খবর, এদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে তদন্তের গতি প্রকৃতি ও এখনও অবধি পাওয়ায় যাবতীয় তথ্য নিয়ে একটি উপস্থাপনা পেশ করবে ত্রী-স্তরীয় তদন্তকারী দল। এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিং। এছাড়া সেনাবাহিনীর সাউর্দান কম্যান্ডের ব্রিগেডিয়ার ও নৌবাহিনীর কমোডরও তদন্তে সহযোগিতা করছেন বলে জানা গিয়েছে।
বায়ু সেনার সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকেই তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়বে। সামরিক কপ্টার ভেঙে পড়া ও বিপিন রাওয়াত সহ সকল যাত্রীর মৃত্যুর তদন্ত প্রায় শেষ হয়েই এসেছে। আর কয়েকদিনের মধ্য়েই তা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আকারে বায়ুসেনার কাছে জমা দেওয়া হবে। পরে তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কাছেও পেশ করা হবে।
বায়ুসেনার তরফে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি পেশ না করা হলেও, সূ্ত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়ার কারণ জানা গিয়েছে। প্রথমে যান্ত্রিক ত্রুটি মনে করা হলেও, জানা গিয়েছে “কন্ট্রোলড ফ্লাইট ইনটু টেরিন”(Controlled Flight into Terrain) -র কারণে কপ্টারটি ভেঙে পড়ে। অর্থাৎ হেলিকপ্টারের পাইলট বুঝতে না পেরে কোথাও জোরে ধাক্কা মেরেছিল, তারফলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে কপ্টারটি।
তদন্তকারী দলের এক সদস্যের সূত্রে জানা গিয়েছে, যেভাবে এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে যে খারাপ আবহাওয়ার কারণে নীচের রেললাইনের উপর নজর রেখেই ওয়েলিংটনের ডিফেন্স স্টাফ কলেজের দিকে যাচ্ছিল।
আচমকাই সামনে একটি ঘন মেঘ চলে আসে। হেলিকপ্টারটি গন্তব্যের কাছাকাছি চলে আসায় কম উচ্চতায় উড়ছিল। আচমকাই উচ্চতা পরিবর্তন সম্ভব হয়নি বলেই মেঘের ভিতর থেকে কপ্টারটি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেঘের ভিতর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করার সময়ই আচমকা কোনও পাহাড়ের কোণায় ধাক্কা লাগে এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কপ্টারটি ভেঙে পড়ে।