শ্রীনগর: গত কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে জঙ্গি (Terrorist) দমনে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনা। পরপর বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে এই অভিযান চলাকালীন। আর আজ কাশ্মীরের উরি (Uri) সেক্টরে এক জঙ্গিকে নিকেশ করার পাশাপাশি এক লস্কর (Lashkar-e-toiba) জঙ্গিকে হাতেনাতে ধরেছে সেনাবাহিনী। জানা গিয়েছে, ১৮ বছরের বাবর পাত্র লস্কর-ই-তইবার সদস্য। ভারতে প্রবেশ করে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর পরিকল্পনা করেছিল এই জঙ্গি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে জঙ্গি দমনে চলছে বিশেষ অভিযান। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে ওই জঙ্গি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ওকারার বাসিন্দা। এ ছাড়া গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনার সঙ্গে লড়াইতে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ বছর বয়সি পাক জঙ্গি কারি আনাজের। সেনাবাহিনী তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় গুলি চালালে, সেই গুলি লেগে তার মৃত্যু হয়। ওই জঙ্গির কাছ থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে দুটি গ্রেনেড।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০১৬-তে যে জঙ্গিরা উরির সেনা ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছিল, তারা যে পথে অনুপ্রবেশ করেছিল, এই জঙ্গিরাও সেই পথেই অনুপ্রবেশ করেছে। ২০১৬-তে সালামাবাদ নালা দিয়ে ঢুকেছিল জঙ্গিরা। পাক সেনার সাহায্য নিয়েই প্রবেশ করেছিল তারা। জেরায় ধৃত জঙ্গি জানিয়েছে, ‘আমার দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে ভুল বুঝিয়ে লস্করের সদস্য করা হয়েছে। সে জানিয়েছে বাড়িতে রয়েছে তার বিধবা মা, দত্তক নেওয়া বোন। দারিদ্র্যের ঠেলায় অল্প বয়সেই স্কুল ছাড়তে হয়েছিল তাকে। জেরায় আরও জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের মিথ্যা কাহিনী শুনিয়ে করা হয়েছে মগজধোলাই। তাকে দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। পরে আরও ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, গত দু’দিনে তিনটি ভিন্ন জায়গায় অনুপ্রবেশকারীদের উপস্থিতির কথা জানতে পারে সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে একজনকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের খোঁজে এখনও চলছে তল্লাশি। সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইতে আহত হয়েছেন চার জওয়ান। শনিবার থেকে কিছু সন্দেহজনক লোকজনের আনাগোনা চোখে পড়ায় শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। বিশেষত উরি সেক্টরের এলওসি-র কাছে বিশেষ নজর দেয় সেনা।
সেনাবাহিনীর এই সাফল্যের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মেজর জেনারেল বীরেন্দ্র ভাট জানান, ধৃত লস্কর জঙ্গির নাম আলি বাবর পাত্র। জেরায় জঙ্গিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছে সে। পাকিস্তানের মুজফফরবাদে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে। পাক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ নিয়ে ইসলামাবাদকে তুলোধোনা করেছেন মেজর জেনারেল। তিনি বলেন, পাকিস্তান সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা থাকলে এত বড় দল অনুপ্রবেশ করতে পারত না। সীমান্তের ওই পাড়ে জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড তৈরি হয়েছে। সেখানে বারবার সন্দেহজনক গতিবিধি ধরা পড়ছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Kanhaiya Kumar: চুকে গেল সব সম্পর্ক! সিপিআই অফিস থেকে এসি খুলে নিয়ে গেলেন কানহাইয়া