Indian Army: দেশের প্রতিটি জওয়ানের মাথার উপরে উড়বে ড্রোন, যুদ্ধ জয়ে নয়া কৌশল ভারতের

দীপেন্দু পাল | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Mar 18, 2025 | 4:58 PM

Indian Army: নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া 'ভারত ড্রোন মন্থন ২.০'-এ উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, নীতি নির্ধারক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। সেখানেই মেজর জেনারেল মান বলেন, 'ড্রোন এখন আর শুধুই সেনার হাতিয়ার নয়, বরং সেনারই একটা অংশ।'

Indian Army: দেশের প্রতিটি জওয়ানের মাথার উপরে উড়বে ড্রোন, যুদ্ধ জয়ে নয়া কৌশল ভারতের
এবার প্রত্যেক জওয়ানের মাথায় ড্রোন!
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন ‘এক দেশ-এক ভোট’-এর। আর ভারতীয় সেনার টার্গেট ‘এক সেনা-এক ড্রোন’। সহজে বললে, পদাতিক বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিরাপদ ও বিপক্ষের চেয়ে একধাপ এগিয়ে রাখতে প্রতি জওয়ানের মাথার উপরে একটি করে ড্রোন ওড়াতে চায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ড্রোনগুলি হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ‘ঈগল ড্রোন’। এগুলি নামেও যেমন, কাজেও ঠিক তেমন হবে। ঈগলের মতো নজর রাখবে শত্রুর দিকে, আর প্রয়োজনে উড়ে গিয়ে হামলাও চালাতে পারবে। সেনার জন্য আকাশে উড়তে সক্ষম একজোড়া চোখের মতোই গতিবিধি হবে এই ড্রোনের। ‘ইনফ্যান্ট্রি লেভেল কমব্যাট’ বা শত্রুর সঙ্গে মাটিতে মুখোমুখি লড়াইয়ের সময় কিলার হান্টার-এর কাজ করবে এই ড্রোন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ‘ভারত ড্রোন মন্থন ২.০’-এ আর্মি ডিজাউন ব্যুরো (ADB)-র এডিজি মেজর জেনারেল সি এস মান, প্রতি সেনা পিছু একটি করে ড্রোনের পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, এখন যুদ্ধক্ষেত্র আগের চেয়ে একটাই আধুনিক হয়েছে। দুশমনকে টার্গেট করে অস্ত্র হাতে পদাতিক সেনার এগিয়ে যাওয়াটা এখন আর নিরাপদ নয়, তার জন্য প্রয়োজন আগাম নজরদারি। সেই জন্যই দরকার ঈগল ড্রোনের। এই ড্রোনগুলি টার্গেটকে তাক করে শুরুতেই উড়ে যাবে, টার্গেটের দিক থেকে কতটা আক্রমণ ধেয়ে আসতে পারে তার একটা আগাম আঁচ দেবে ও নির্দেশ পেলে টার্গেটকে ধ্বংসও করবে। ঈগল ড্রোন এতটাই হালকা ও বহনযোগ্য যে একজন সেনা তাঁর কাঁধের ব্যাকপ্যাকেই একে বহন করতে পারেন। এটি মূলত হ্যান্ড লঞ্চ UAV। অর্থাৎ এই ‘আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল’-কে হাতে করেই ওড়ানো যায়। রাতের অন্ধকারেও দুশমনের আনাগোনা আঁচ করতে পারে ঈগল। চোখের নিমেষে ধ্বংস করতে পারে টার্গেটকে।

নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ভারত ড্রোন মন্থন ২.০’-এ উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, নীতি নির্ধারক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। সেখানেই মেজর জেনারেল মান বলেন, ‘ড্রোন এখন আর শুধুই সেনার হাতিয়ার নয়, বরং সেনারই একটা অংশ।’ সর্বাধুনিক ড্রোন নির্মাণে দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষবিহীন লড়াইয়ের জন্য ড্রোন তৈরিতে গঠন করা হয়েছে আর্মি ডিজাউন ব্যুরো। অনেক সময়ই দেখা যায়, LOC বা LAC-তে শত্রুপক্ষের উপর নজর রাখতে বা হামলা ঠেকাতে দেশের সেনাকে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে এগোতে হয়। তাঁরা জানতেও পারেন না, উল্টোদিকে তাঁদের জন্য কী অপেক্ষা করে রয়েছে। ড্রোন সেই ‘সারপ্রাইজ অ্যাটাক’-কে প্রতিহত করতে সাহায্য করবে। দেশের শিল্পপতিদের আরও উন্নতি প্রযুক্তি ও ঘাতক ড্রোনের নির্মাণের জন্য গবেষণায় অর্থ সাহায্যের আহ্বান জানান মেজর জেনারেল মান।

আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রকে আমূল পাল্টে দিয়েছে ড্রোন। যেমন রুশ-ইউক্রেনের যুদ্ধ বা আর্মেনিয়া বনাম আজারবাইজান সংঘাতে প্রতিপক্ষের রক্তচাপ বাড়িয়েছে এই ড্রোন বা UAV। একবার শত্রুর অবস্থান নিশ্চিত করে, একটি সেন্ট্রাল ড্রোন কমান্ড সেন্টার থেকে একঝাঁক ড্রোন ছেড়ে দিলেই হল। নিজের দেশের সেনার একফোঁটা রক্ত না ঝরিয়েও বিপক্ষকে তছনছ করে দিতে পারে ড্রোন। সেই কারণেই ভারতীয় সেনার জন্যও ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক ড্রোনের প্রয়োজন বলে মনে করবে দিয়েছে আর্মি ডিজাইন ব্যুরো। প্রবল ঠাণ্ডায় হিমালয়ের দুর্গম পার্বত্য এলাকায় শুধু জওয়ানদের স্বশরীরে পাহারা দেওয়ার চেয়ে ড্রোনের নজরদারিও জরুরি। ওই প্রবল ঠাণ্ডায় সেনার বন্দুক পর্যন্ত অনেকসময় ঠিকমতো কাজ করে না। মেশিনের ক্ষমতা কমে দাঁড়ায় ৬০ শতাংশে। আবার রাজস্থানের ধূধূ মরুভূমিতে, গুজরাটের কচ্ছের কর্দমাক্ত সীমান্তেও নজরদারিতে ড্রোন অনেকটাই সাহায্য করতে পারে। তার জন্য দরকার আলাদা আলাদা রকমের ড্রোন।

সারসংক্ষেপ ঈগল ড্রোন এতটাই হালকা ও বহনযোগ্য যে একজন সেনা তাঁর কাঁধের ব্যাকপ্যাকেই একে বহন করতে পারেন। এটি মূলত হ্যান্ড লঞ্চ UAV। অর্থাৎ এই ‘আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল’-কে হাতে করেই ওড়ানো যায়। রাতের অন্ধকারেও দুশমনের আনাগোনা আঁচ করতে পারে ঈগল। চোখের নিমেষে ধ্বংস করতে পারে টার্গেটকে।