পুরী: মশা মারতে কামান দাগা! মুষিকদলের উৎপাতে নিদ্রাভঙ্গ হচ্ছে জগন্নাথদেবের। খাবার, পোশাকও নষ্ট হচ্ছে। শত চেষ্টা করেও ইঁদুর তাড়াতে ব্যর্থ পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়ত থেকে কর্মীবৃন্দ। অগত্যা এবার ইঁদুর ধরতে আসরে নামলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ASI) আধিকারিকেরা। একেবারে জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) গর্ভগৃহে ঢুকে ইঁদুর ধরার প্রয়াস শুরু করেছেন তাঁরা। হাতে বেশি সময় নেই। উল্টো রথযাত্রা হওয়ার আগেই ইঁদুর-অভিযান সম্পন্ন করতে তৎপর তাঁরা।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের তরফে জানানো হয়েছে, রথ উৎসব উপলক্ষ্যে বর্তমানে তিন বিগ্রহ-জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী মাসির বাড়ি গুন্ডিচায় অবস্থান করছেন। ফলে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহ আপাতত বিগ্রহ-শূন্য। আগামী বুধবার উল্টো রথযাত্রার পর জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী মন্দিরে ফিরে আসবেন। তাই উল্টো রথযাত্রার আগেই জগন্নাথদেবের নিদ্রাভঙ্গকারী ইঁদুর ধরতে তৎপর মন্দির কর্তৃপক্ষ।
ইঁদুর ধরার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবারই জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন ASI আধিকারিকেরা। তাঁরা গর্ভগৃহে ইঁদুরের গর্তগুলি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং কীভাবে ইঁদুর ধরা যায়, সে ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। ASI-এর সুপারিটেন্ডিং আর্কিওলজিস্ট (পুরী সার্কেল) ডি.বি গারনায়ের বলেন, “গর্ভগৃহের ছাদ, দেওয়াল ও মেঝে ভাল রয়েছে কিনা জানতে আমরা রুটিন পর্যবেক্ষণ করব। এছাড়া কীভাবে ইঁদুর মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করছে, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। গর্তগুলি চিহ্নিত করে এবং ড্রেনেজ সিস্টেম খতিয়ে দেখার পরই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।” যদিও ইঁদুরের প্রবেশ ও অন্যান্য পোকামাকড়ের উৎপাত ঠেকাতে গর্ভগৃহের গর্তগুলিতে রাসায়নিক দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ মন্দিরের আধিকারিক।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইঁদুর তাড়াতে এক বিশেষ মেশিন পরীক্ষামূলকভাবে জগন্নাথদেবের গর্ভগৃহে চালানো হয়েছিল। এক পুণ্যার্থী সেই মেশিন দান করেছিলেন। কিন্তু, সেই মেশিনের অত্যধিক আওয়াজ জগন্নাথদেবের নিদ্রাভঙ্গ করতে পারে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়। ফলে মেশিনটি আর চালানো হয়নি। এদিকে, ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়তরা। জগন্নাথদেবের রত্ন সিংহাসনে হানা দিয়েছে মুষিকদল। বিগ্রহের ফুলের মালা থেকে পোশাকও কেটে দিচ্ছে তারা। ভোগের থালতেও মুখ দিচ্ছে।
মন্দিরের এক আধিকারিক জানান, গর্ভগৃহে ইঁদুরের বিষ দেওয়া নিষিদ্ধ। ফলে ইঁদুর ধরতে খাঁচা পাতা হয়েছিল। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি। তাই এবার ইঁদুর ধরতে নামল খোদ ASI কর্তৃপক্ষ।