নয়া দিল্লি: সুপ্রিম রায়ে মান্যতা পেয়েছে ‘অসম অ্যাকর্ড’ তথা ‘অসম চুক্তি’। ফলে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে যারা অন্য দেশ থেকে অসমে অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। তবে ওই চুক্তিতে ছিল আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নির্ধারিত ওই দিনের পর যারা অসমে প্রবেশ করেছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে, আটক করতে হবে ও নির্বাসন দিতে হবে অর্থাৎ দেশের বাইরে বের করে দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়া যাতে ত্বরাণ্বিত হয়, সে কথা নির্দেশনামা তথা অর্ডারে উল্লেখ করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত।
নাগরিকত্ব আইনের ৬এ ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। মামলাকারীদের দাবি ছিল, অনুপ্রবেশ বাড়তে থাকলে লঙ্ঘিত হবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯ অর্থাৎ সংস্কৃতি রক্ষার অধিকার। একইসঙ্গে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১ অর্থাৎ স্বাধীনতার সঙ্গে জীবন কাটানোর বিষয়টিও প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি সূর্য কান্তের বক্তব্য, অসমের সংস্কৃতি রক্ষায় কোনও প্রভাব পড়ছে এমন কোনও বৈধ প্রমাণ দেখাতে পারেনি মামলাকারীরা। একই সঙ্গে বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, নির্ধারিত দিনের পরে যারা অসমে এসেছে, তাদের চিহ্নিত করতে বিতাড়িত করতে হবে।
বিচারপতি কান্ত নির্দেশনামায় উল্লেখ করেছেন, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে যারা অসমে প্রবেশ করেছে, তারা অসমের নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে। ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে যারা অসমে প্রবেশ করেছে, তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। আর যারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর অসমে প্রবেশ করেছে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। তাদের চিহ্নিত করে, আটক করে, বিতাড়িত করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া কার্যকর করার কথাও বলেছেন বিচারপতি।
বিচারপতি কান্তের মতে, যে ট্রাইব্যুনাল আছে এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার জন্য, তা পুরো প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য যথেষ্ট নয়। এই মামলার শুনানিতে আদালত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর অসম ও উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে যে অনুপ্রবেশ হয়েছে, তার হিসেব দিতে হবে।