ইম্ফল: মেইতেই-কুকি সংঘর্ষে আগুন জ্বলছে মণিপুর জুড়ে। এরই মধ্যে, ভারত-মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে অন্তত ৭১৮ জন শরণার্থী মায়ানমার থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে অসম রাইফেলস। তাদের মধ্যে ৩০১ জন শিশু রয়েছে। মণিপুরের চান্দেল জেলার ডেপুটি কমিশনারকে অসম রাইফেলসজানিয়েছে, ২২ এবং ২৩ জুলাই – এই দুই দিনের মধ্যেই বিপুল পরিমাণ শরণার্থী প্রবেশ করেছে মণিপুরে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এই বিষয়ে অসম রাইফেলসের কাছে বিশদ রিপোর্ট চাইল মণিপুর সরকার। কীভাবে মায়ানমারের ওই নাগরিকদের ভ্রমণে নথি ছাড়াই ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল, তা দালতে চাওয়া হয়েছে।
সোমবার রাতে এই বিষয়ে অসম রাইফেলসকে একটি চিঠি দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্য সচিব বিনীত জোশী। চিঠিতে তিনি বলেছেন, মণিপুর-মায়ানমারের সীমান্ত পাহাড়া দেয় অসম রাইফেলস। অতীতেও একই ধরণের সমস্যার হয়েছে। সেই সময় রাজ্য সরকার স্পষ্টভাবে অসম রাইফেলস-কে জানিয়েছিল, বৈধ ভিসা বা ভ্রমণের নথি ছাড়া কোনও পরিস্থিতিতেই মায়ানমারের নাগরিকদের মণিপুরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সীমান্ত রক্ষী হিসেবে অসম রাইফেলসকেই তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হবে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশনাতেও এই ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মণিপুরের মতো, বর্তমানে সংঘর্ষ চলছে সীমান্তের ওই পাড়ের মায়ানমারেও। বর্তমানে, সীমান্তবর্তী খাম্পাতে সেনার সঙ্গে মায়ানমারের বিদ্রোহী যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছে। সেই সংঘর্ষ এড়াতেই, মায়ানমার থেকে দলে দলে মানুষ চান্দেল জেলার মধ্য দিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশ করছে। বিনীত জোশী জানিয়েছেন, কোন পরিস্থিতিতে এবং কেন এই ৭১৮ জন মায়ানমার নাগরিককে, ভ্রমণ সংক্রান্ত কোনও নথি ছাড়াই চান্দেল জেলায় ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অবিলম্বে তাদের সকলকে মায়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর সরকার। এর পাশাপাশি, চান্দেল জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে মায়ানমার থেকে সকল ব্যক্তির বায়োমেট্রিক তথ্য এবং ছবি সংগ্রহ করতে এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মায়ানমারে সাধারণ মানুষের উপর সেনার অত্যাচারের বিভিন্ন ঘটনার ভিডিয়ো ও খবর, মণিপুরের বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি মায়ানমারে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হাতে এক মহিলার হত্যার ভিডিয়ো মণিপুর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ঘটনা রাজ্যের বলে দাবি করে, উসকানি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার এই বিষয়ে একটি ভুয়ো খবর ছড়ানোর এফআইআর নথিভুক্ত করেছে মণিপুর পুলিশ। যারা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।