গুয়াহাটি: হাতে খোলা কাটারি। গলায় সোনার চেন, হাতে বালা। তিনি নাকি প্রধান শিক্ষক। কাটারি নিয়ে এসেছেন স্কুলের ‘বিশৃঙ্খল’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ন্ত্রণ করতে। অসমের কাছাড় জেলার এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এমনই দৃশ্যের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশের নজরে আসতেই তারা হস্তক্ষেপ করে। ওই প্রধান শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে তাঁর নাম ধৃতিমেধা দাস। শিলচরের তারাপুর এলাকার বাসিন্দা, ৩৮ বছরের ধৃতিমেধা গত ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন। কিন্তু, তিনি কেন হঠাৎ এমন পদক্ষেপ করলেন, সেই বিষয়টা এখনও স্পষ্ট নয়।
শিলচরের রঙ্গিরখাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে কাছাড় জেলার রাধামাধব বুনিয়াদি স্কুল থেকে এই ঘটনার বিষয়ে একটি ফোনকল এসেছিল তাদের কাছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, তাদের দেখে প্রধান শিক্ষক ধৃতিমেধা প্রথমে অস্ত্রটি লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু স্কুলে ঢোকার পর, ছাত্র এবং অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্কের ছাপ লক্ষ্য করেছিল পুলিশ কর্মীরা। এরপর, ধৃতিমেধাকে চাপ দিতেই, সে কাটারি নিয়ে স্কুলে আসার কথা স্বীকার করে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, তাকে অল্প সময়ের জন্য স্কুলের ভিতরেই আটকে রাখা হয়েছিল। তার কাছ থেকে কাটারিটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই বিষয়ে শিক্ষা বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে পুলিশ।
#WATCH || Head teacher of a lower primary school in Assam’s Cachar district was suspended from his post after he came to the institution with a ‘dao’ (machete).
38-yo Dhritimedha Das is a resident of the Tarapur area in Silchar and has been working as a teacher for over 11 years pic.twitter.com/Ve0QmKXcgK
— truth. (@thetruthin) November 7, 2022
কাছাড় জেলার ডেপুটি ইন্সপেক্টর অফ স্কুল, পারভেজ নিহাল হাজারি জানিয়েছেন, ওই স্কুলে অন্যান্য শিক্ষকরা বিভিন্ন বেনিয়ম করে যাচ্ছিলেন। সেই কারণেই প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। সেই ক্ষোভ এবং হতাশা থেকেই কাটারি নিয়ে স্কুলে এসে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভয় দেখাতে চেয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, ওই স্কুলে মাত্র সাতজন শিক্ষকের প্রয়োজন হলেও, সব মিলিয়ে শিক্ষক আছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে কোনও শৃঙ্খলা নেই। শৃঙ্খলা ফেরাতেই প্রধান শিক্ষক এই অদ্ভূত পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তবে, ধৃতিমেধা দাসের বিরুদ্ধে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক বা শিক্ষা দফতর থেকে কোনও অভিযোগ জানানো হয়বনি। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে, এই ঘটনার জেরে তাঁকে অস্থায়ীভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতিমেধার কাছ থেকে দুটি নোট পাওয়া গিয়েছে। একটি নোটে তিনি “তাঁর কিছু হলে” তার জন্য চারজন শিক্ষককে দায়ী করেছেন। সূত্রের খবর, আরেকটি নোটে তিনি আবার তিন শিক্ষককে হত্যা করবেন বলে লিখেছেন। এই ঘটনা কাছাড় জেলায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।