লখনউ: বৃষ্টির দেখা নেই। কাঠফাটা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রার যে ব্য়াপক পরিবর্তন হয়েছে, তারই ভয়াল রুপ দেখছে উত্তর প্রদেশ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবলমাত্র উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলাতেই বিগত তিনদিনে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। সকলেরই মৃত্যুর জন্য প্রত্য়ক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী অতিরিক্ত গরম। তাপপ্রবাহের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কমপক্ষে ৪০০ জন। বিগত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ বইছে উত্তর প্রদেশে। অধিকাংশ জায়গাতেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি পার করেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হঠাৎ এতজনের মৃত্যুর পিছনে একাধিক কারণ হতে পারে, তবে প্রাথমিকভাবে অত্যাধিক গরমের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত এক সপ্তাহ ধরেই বালিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিকাংশ রোগীই জ্বর, শ্বাসকষ্টের মতো শারীরিক সমস্যা নিয়ে আসছেন। অধিকাংশ হাসপাতালেই রোগী উপচে পড়ছে। বালিয়া জেলা হাসপাতালের মেডিক্য়াল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইনচার্জ এসকে যাদব জানান, গত ১৫ জুন ২৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার পরেরদিন ২০ জনের মৃত্যু হয় এবং গতকাল, অর্থাৎ ১৭ তারিখ ১১ জন রোগীর মৃত্য়ু হয়েছে।
আজমগড়ের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ডিরেক্টর ডঃ বিপি তিওয়ারি জানান, হঠাৎ এত রোগী মৃত্যুর পিছনে কোনও রোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে লখনউ থেকে একটি বিশেষ দল আসছে। সাধারণত অত্য়াধিক গরম বা ঠাণ্ডা পড়লে শ্বাসকষ্ট, মধুমেহ ও রক্তচাপের রোগীদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাপমাত্রার হঠাৎ বৃদ্ধি একসঙ্গে এত রোগীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালগুলিতে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে রোগীদের নিয়ে আসার মতো স্ট্রেচারও জুটছে না। রোগীদের কাঁধে নিয়েই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ছুটতে হচ্ছে। হাসপাতালের বাইরেও রোগীদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। যদিও হাসপাতালের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন নয়। হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে একসঙ্গে ১০ জন রোগী উপস্থিত হলে, তখন তো সমস্যা হবেই।