চেন্নাই: লাগবে ৬টি ট্রাঙ্ক! তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার হিরে ও সোনার গয়না বহন করার জন্য। যার সম্মিলিত ওজন ২৭ কেজি। ২০১৪ সালে দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। ৪ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০০ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছিল। তারপর এক দশক কেটে গিয়েছে। জয়ললিতার মৃত্যু হয়েছে তাও সাত বছর হল। এতদিনে, সেই ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য তার সম্পত্তি বিক্রি করার আইনি প্রক্রিয়া শুরু হল। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি), বেঙ্গালুরুর এক সিভিল কোর্ট, ৬ ও ৭ মার্চ, জয়ললিতার ২৭ কেজি সোনা এবং হীরার গয়না তামিলনাড়ুর স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে।
জয়ললিতার জরিমানার ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ২০ কেজি গয়না বিক্রি বা নিলাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাকি ৭ কেজি গয়না জয়ললিতা তাঁর মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। তাই সেগুলি, তাদের পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ক্যানফিন হোমস লিমিটেড সংস্থায় জয়ললিতার একটি অ্যাকাউন্ট ছিল। সোমবার বেঙ্গালুরুর ওই বিশেষ আদালতে, ওই অ্যাকাউন্টে থাকা ৫৯ লক্ষ টাকা আদালতের হাতে তুলে দিয়েছে সংস্থাটি। বিশেষ আদালতের বিচারক জানিয়েছেন, ওই সরকারের পক্ষ থেকে ওই সোনা গ্রহণ করার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ভিজিল্যান্স ও দুর্নীতি-বিরোধী দফতরের একজন আইজি ব়্যাঙ্কের অফিসারকে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনে, ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি সরকারী আদেশ জারি করেছে তামিলনাড়ু সরকার।
আদালত জানিয়েছে, গয়না সংগ্রহের জন্য ৬ মার্চ, একজন ফটোগ্রাফার এবং একজন ভিডিওগ্রাফারকে সঙ্গে নিয়ে তামিলনাড়ুর স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্য সচিব এবং ভিজিল্যান্স ও দুর্নীতি-বিরোধী দফতরের আইজিপি আসবেন আদালতে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা থাকবে। আর থাকবে ছয়টি বড় মাপের ট্রাঙ্ক। সিভিল কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গয়নাগুলি হস্তান্তরের জন্য নির্ধারিত ওই দুই দিনে আদালতে যথযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার জন্য। এর জন্য তাঁকে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।
2014 সালের সেপ্টেম্বরে, দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল জয়ললিতা, এন শশিকলা, জে ইলাভারসি এবং ভিএন সুধাকরণকে। তাদের প্রত্যেককে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জয়ললিতাকে ১০০ কোটি টাকা এবং বাকিদের ১০ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল। কর্নাটক হাইকোর্টৈ আবেদন করে, ২০১৫ সালে সকলেই খালাস পেয়েছিলেন। ২০১৭-য় সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ই পুনর্বহাল করে। তবে, তার আগেই মৃত্যু হয়েছিল জয়ললিতার। তাই, তাঁর কারাদণ্ড বাতিল করা হয়। বাকি তিনজনকে অবশ্য চার বছরের সাজা ভোগ করতে হয় এবং জরিমানাও দিতে হয়। এরপর, জয়ললিতার উপর আরোপ করা ১০০ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করার জন্য তাঁর স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি নিলাম করার নির্দেশ দেয় আদালত। এখন সেই প্রক্রিয়াই চলছে। সোনা ও হিরের গয়না নিলামের পর, জরিমানার বকেয়া টাকা মেটাতে আদালত তাঁর স্থাবর সম্পত্তি নিলাম করবে।