বেঙ্গালুরু: প্রায় সিনেমার কায়দায় এক মোটরবাইক আরোহীকে তাড়া করেছে একটি স্করপিও গাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত রাস্তা দিয়েই উর্ধ্বশ্বাসে বাইক ছোটাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। এক সময় স্করপিওর ধাক্কায় পড়ে যান বাইক আরোহী। তারপরও ছুটে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, ফের তাকে ধাওয়া করে পিষে দিয়েছিল গাড়িটি। অবশেষে, ওই ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় গাড়িটি। সেখানে পড়ে পড়েই মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। বেঙ্গালুরু শহরের রাস্তায় প্রকাশ্যেই ঘটে গেল নৃশংস হত্যা।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ, শহরের পুলকেশী নগর এলাকায়। এক পথচারীর মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই গা শিরশিরে ঘটনা। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর), এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, এক আর্থিক বিরোধের জেরেই ওই ব্যক্তিকে খুন করেছে তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম আসগর। পুলকেশী নগর এলাকায়, রাস্তাতেই পড়েছিল তাঁর মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে ওই এলাকার ট্রাফিক পুলিশ কর্তারা ধরেই নিয়েছিলেন, কোনও পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে আসগরের। কিন্তু পরে, আসগরের বন্ধুদের জেরা করতেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিয়েছিল। আসগরের বন্ধু পুলিশকে জানিয়েছিলেন, আমরিন নামে এক ব্যক্তি এবং তাঁর দুই সহযোগীই আসগরকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। এরপরই, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ।
Man – a car dealer by profession dies after being run over by a Scorpio owned by one Amreen, in Bengaluru. The accused had purchased the car from the dealer and was due to pay him Rs 4 lakh. An argument between the two turned violent when the accused mowed the dealer down.… pic.twitter.com/V2zufHF91c
— Vani Mehrotra (@vani_mehrotra) October 31, 2023
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আসগর সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির ব্যবসা করত। অভিযুক্ত আমরিনদের সঙ্গেও তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি, আসগরের কাছ থেকে একটি গাড়ি কিনেছিলেন আমরিন। সেই বাবদ আসগরকে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকা দেয়নি আমরিন। আসগর তার হকের টাকা চাইলে, আমরিনের সঙ্গে আসগরের কথা কাটাকাটি শুরু হয়েছিল। এমনকি, দুজনের মধ্যে একপ্রস্থ মারামারিও হয়েছিল। এর জেরে জেসি নগর থানায় আমরিনের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে মামলাও দায়ের করেছিলেন আসগর। আসগরকে মামলাটি তুলে নিতে চাপ দিয়েছিলেন আমরিন। কিন্তু, আসগর রাজি হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, এরপর ১৮ অক্টোবর, অর্থাৎ, হত্যার রাতে আসগরকে এক জায়গায় এসে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছিল আমরিন। বলেছিল, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চায়। কিন্তু, আসগর নির্ধারিত জায়গায় আসতেই অভিযুক্ত তিনজন ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তার পরের নৃশংস দৃশ্য বন্দি হয়েছে পথচারীদের মোবাইল ক্যামেরায়। প্রাথমিকভাবে, তিন অভিযুক্তই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পুলিশের চাপের সামনে অপরাধ স্বীকার করে তারা।