নয়া দিল্লি: আদালতের দ্বারস্থ হয়েও মিলল না সুরাহা। রেলে চাকরির দুর্নীতিতে এবার বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতেই হবে। নির্দেশ দিল দিল্লি হাই কোর্টের। তেজস্বী যাদবকে ২৫ মার্চ দিল্লিতে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থা আদালতে স্পষ্ট জানিয়েছে, কেবলমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাঁকে ডাকা হচ্ছে। আরজেডি নেতাকে গ্রেফতার করা হবে না। সেই আশ্বাস পেয়েই হাজিরা দিতে রাজি হন তেজস্বী। প্রসঙ্গত, জমির বদলে রেলে চাকরির দুর্নীতির অভিযোগে রাবড়ি দেবী ও লালু প্রসাদের বাড়িতে হাজির হয়েছিল সিবিআই। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তল্লাশিও চালানো হয়। তারপর গত শুক্রবার তেজস্বীর দিল্লির বাড়িতেও হাজির হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারপর সিবিআই দফতরে হাজিরার জন্য তেজস্বীকেও সমন পাঠানো হয়। সেই সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বুধবার দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী।
তেজস্বী উল্লেখ করেছেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ তাঁর বাবা লালু প্রসাদ যাদব ও অন্যান্য অফিসারের বিরুদ্ধে। আর যে সময় এই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তখন তিনি নেহাতই নাবালক ছিলেন। তাহলে এই মামলা তাঁকে কেন ডেকে পাঠানো হচ্ছে। তেজস্বীর আবেদনের ভিত্তিতেই দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি চলছিল। সিবিআই-র আইনজীবী ডিপি সিং আদালতে জানান, এই মাসেই সশরীরে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে পারেন তেজস্বী। সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি। তারপরই তেজস্বীর আইনজীবীই আদালতে জানান ২৫ মার্চ তিনি সিবিআই দফতরে উপস্থিত থাকবেন। এদিকে এই জমির বদলে চাকরি দুর্নীতিতে গতকালই ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে আগাম জামিন পেয়েছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী ও তাঁদের মেয়ে মিসা ভারতী।
প্রসঙ্গত, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন জমির বদলে রেলে চাকরির পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল লালু প্রসাদের পরিবারের বিরুদ্ধে। ইউপিএ ১ সরকারের আমলে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রেলমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। সিবিআই-র অভিযোগ সেই সময় লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং তাঁদের কন্যা মিসা যাদব এবং হেমা যাদব, রেলে নিয়োগের বিনিময়ে কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে জমি নিয়েছিলেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই এই কেলেঙ্কারি সম্পর্কিত একটি প্রাথমিক তদন্ত নথিভুক্ত করেছিল সিবিআই। গত বছরের ১৮ মে এই বিষয়ে একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছিল। গত বছরেই জমি-চাকরি দুর্নীতিতে লালু যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং আরও ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল সিবিআই। সেই দুর্নীতির তদন্তে ফের একবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিবিআই।