পাটনা: করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের কালে মৃত্যুর ভয়াবহ রূপ দেখেছে গোটা দেশ। শ্মশানে মৃতদেহের লাইন, নদীতে ভেসে আসা শব রাতর ঘুম উড়িয়েছিল দেশবাসীর। ধীরে ধীরে কমছ সংক্রমণের সংখ্যা, স্বস্তি ফিরছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু বিহারের যে খবর প্রকাশ্যে এসেছে তাতে সরকারি পরিসংখ্যান নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা। করোনায় মৃতের সংখ্যা যখন ১১,৬৬৮, তখন কেন মাত্র পাঁচ মাসে প্রায় ৮২ হাজার মানুষের মৃত্যু হল, সেই সদুত্তর মিলছে না।
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যত সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে বিহারে, তা মোটেই স্বাভাবিক নয়। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮২,৫০০ জনের। বিহারের সরকারি হিসেব বলছে, করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে ৭,৭১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে এর সঙ্গে যোগ করা হয় আরও ৩,৯৫১ জনের নাম। জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে হিসেব অনুযায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১,৬৬৮ জনের। অর্থাৎ বাকিদের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। সেকেন্ড ওয়েভ যখন চলছিল, তারই মধ্যে একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যুর কী বা কারণ থাকতে পারে? প্রশ্ন উঠছে,করোনায় মৃতের সংখ্যা কি লুকোচ্ছে সরকার?
বিহারে মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে গত পাঁচ মাসে রাজ্যে যত মানুষ করোনায় মারা গিয়েছেন তা হল ওই সময়ে মোট মৃত্যুর তুলনায় সামান্য। তবে ইতিহাস বলছে, মৃত্যু নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে দেশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে বিহার বরাবরই পিছিয়ে। করোনাকালে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা কম করে দেখাচ্ছে বলে একটা অভিযোগ উঠেছিল। তার মধ্যে পড়ে বিহারও। এছাড়াও একই অভিযোগ ছিল মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও দিল্লির বিরুদ্ধেও।
আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ শুরু করছে রাজ্য, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানাল স্কুল সার্ভিস কমিশন
অভিযোগ উঠেছিল, উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাত সরকারের বিরুদ্ধেও। পি চিদম্বরম এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন গুজরাটে এই বছর যা মৃত্যু হয়েছে তা গতবছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এক বছরের মধ্যে মৃত্যু সংখ্যায় এতটা ফারাক স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মানতে নারাজ। গুজরাতের এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে চিদম্বরম দেখান, চলতি বছরে মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ১ লক্ষ ২৩ হাজার জনের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।