নয়া দিল্লি: চলতি সপ্তাহেই ভারত সফরে এসেছিলেন বিল গেটস(Bill Gates)। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ তাদের মধ্য়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। নিজের ভারত সফরের অভিজ্ঞতাই ভাগ করে নিলেন বিল গেটস। তিনি জানান, ভারত সফরের অন্যতম সেরা অংশ ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(PM Narendra Modi)-র সঙ্গে সাক্ষাৎ। বিজ্ঞান থেকে শুরু করে উদ্ভাবন, ভারত তথা বিশ্বে অসাম্য কমাতে কী কী বিষয় সাহায্য করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা, এমনটাই জানিয়েছেন বিল গেটস।
ভারত সফরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বিল গেটস বলেন, “করোনা প্যান্ডেমিকের কারণে বিগত তিন বছর আমি খুব একটা কোথাও যাইনি, তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও আমি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলাম, বিশেষ করে করোনা টিকা তৈরি ও ভারতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়। ভারতের অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে সুরক্ষিত, কার্যকরী ও সস্তায় ভ্যাকসিন তৈরির করার। এরমধ্যে বেশ কিছু ভ্যাকসিন তৈরিতে গেটস ফাউন্ডেশন সহায়তা করছে। ভারতে তৈরি ভ্য়াকসিন করোনাকালে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে এবং বিশ্বে অন্যান্য রোগ ছড়িয়ে পড়া থেকে প্রতিরোধেও সাহায্য করেছে।”
করোনাকালে টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে কো-উইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছিল, তার প্রশংসা করে বিল গেটস বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিশ্বাস ছিল কো-উইন বিশ্বের জন্য মডেল হয়ে উঠবে। ওনার চিন্তাভাবনার সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ সহমত”। করোনাকালে ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার উন্নতি ও গতিশক্তি প্রোগ্রামের প্রশংসাও করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ভারতের জি-২০র সভাপতিত্ব পাওয়া এবং তার জেরে ভারতের সামনে কী কী সুযোগ-সুবিধা তৈরি হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিল গেটস। দেশ থেকে টিউবারকিউলোসিসের মতো বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করেন তিনি। টিবি রোগীদের চিকিৎসা ও সুশ্রষার জন্য কেন্দ্রের তরফে টিবি রোগীদের ‘দত্তক’ নেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা শুনে তিনি অভিভূত হয়েছেন বলেও জানান বিল গেটস।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিল গেটসের আলোচনায় একটি বড় অংশ ছিল শিক্ষা ব্যবস্থাও। করোনাকালে শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হলেও, ডিজিটাল ও অন্যান্য মাধ্যমের দ্বারা যেভাবে পড়ুয়াদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তার প্রশংসাও করেন বিল গেটস। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছিল জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও। বিল গেটস বলেন, “বহু বছর ধরে আমরা জলবায়ু নিয়ে কাজ করছি। মিশন ইনোভেশনে ভারতও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ২০১৫ সালে আমরা এই উদ্য়োগ শুরু করেছিলাম ক্লিন এনার্জির প্রচারের জন্য। আশা করছি আগামিদিনেও আমরা একসঙ্গে কাজ করব।”
চলতি সপ্তাহেই পুসায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিলেন বিল গেটস। সেখানে কৃষকদের উষ্ণ জলবায়ুতে কীভাবে চাষবাস করতে হয়, কোন ধরনের গম ও ছোলা বপন করলে তা খরা পরিস্থিতিতেও টিকে থাকতে পারবে, সে সম্পর্কে একাধিক তথ্য জানতে পেরেছেন বলে জানান তিনি। এমনকী, একটি “গোদ ভরাই” অনুষ্ঠানে তিনি মিলেটের খিচুড়ি খেয়েছেন বলেও জানান বিল গেটস। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলার পর ভারতের স্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও জলবায়ু নিয়ে তিনি আরও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বলে জানান।