মুম্বই : টালমাটাল মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। উদ্ধবের সরকার ভেঙে তৈরি হয়েছে শিন্ডে-ফড়নবীসের সরকার। কিন্তু কে হবেন মহারাষ্ট্রের বিধানসভার অধ্যক্ষ? বিজেপির তরফ থেকে স্পিকার পদের জন্য মনোনীত করা হয়েছে পদ্ম বিধায়ক রাহুল নারেকারকে। ৪৫ বছর বয়সি নারেকার প্রথম বারের বিধায়ক। শুক্রবার স্পিকার পদের জন্য মনোনয়ন জমা দেন তিনি। শিন্ডে-ফড়নবীস সরকার গঠনের একদিন পরেই বিজেপির তরফ থেকে স্পিকার পদের জন্য নারেকারকে বেছে নেওয়ায় রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বেশ অবাক।
রাহুল নারেকার পেশায় একজন রাজনীতিক। অতীতে শিবসেনা এবং এনসিপির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। পদ্ম শিবির তাঁকে দক্ষিণ মুম্বইয়ের কোলাবা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিল এবং তিনি জয়ী হন। বর্তমানে মহারাষ্ট্র বিজেপির মিডিয়া ইন-চার্জের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
বিধানসভার অধ্যক্ষ কে হবেন, তা নিয়ে যদি কোনও ভোটাভুটির প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামিকাল (৩ জুলাই) তা হবে। ওইদিনই মহারাষ্ট্র বিধানসভায় দুই দিনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। বিধানসভায় শিন্ডে-ফড়নবীসের নতুন সরকারকে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। উল্লেখ্য, অতীতে প্রায় ১৫ বছর শিবসেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নারেকার। তারপর ২০১৪ সালে মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের জন্য তাঁকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছিলেন অনেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিবসেনার থেকে তাঁকে বিধান পরিষদের আসন দেওয়া হয় না। এরপরই তিনি শিবসেনা ছেড়ে শরদ পাওয়ারের এনসিপিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে এনসিপির থেকে তাঁকে মাভাল লোকসভা কেন্দ্রের জন্য টিকিট দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি পরাজিত হন। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং কোলাবা থেকে বিধায়ক হন।
অতীতের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, সাধারণত বিধানসভার অধ্যক্ষ হিসেবে যাঁকে বেছে নেওয়া হয়, তিনি বর্ষীয়ান রাজনীতিক হন এবং পরিষদীয় রাজনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতাও থাকে অনেক। কিন্তু স্পিকারের পদের জন্য, একেবারে প্রথম বারের বিধায়ক নারেকারকে বেছে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত বিজেপি নিয়েছে, তা স্বাভাবিকাভাবেই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নারেকারের আইনের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, তাঁর অভিজ্ঞতা বিধানসভার কার্যকলাপ চালাতে যথেষ্ট সাহায্য করবে। দলের কেউ কেউ এমনও বলছেন, নারেকার প্রথম বারের বিধায়ক হলেও তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অনেক। একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রেও নারেকারের রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা রামরাজে নিমবালকারের জামাই নারেকার। নারেকারের বাবা সুরেশ নারেকার মুম্বই পুরনিগমের কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর ভাইও মুম্বই পুরনিগমের দ্বিতীয় বারের কাউন্সিলর।