নয়াদিল্লি: আধার নিয়ে চরম বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। ভয়ও পাচ্ছেন প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা। রবিবারই বীরভূম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দেন। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে ভয় না পাওয়ার বার্তা দিয়ে বলেন, “আমি বাংলার মানুষকে বলতে পারি ভয় পাবেন না, আমি আছি।” আর মমতা সরব হতেই কেন্দ্রের আশ্বাস ভয় নেই। শান্তনু ঠাকুর, সুকান্ত মজুমদাররা বসলেন বৈঠকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করেছেন শান্তনু ঠাকুর এবং সুকান্ত মজুমদার। এরপরই তাঁরা জানান, পুরোটাই প্রযুক্তিগত ত্রুটি। খুব তাড়াতাড়ি এর সমাধান হয়ে যাবে।
সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেন, “আমি ক্ষমা চাইছি। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হচ্ছে। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অশ্বিনী বৈষ্ণব, সুকান্ত মজুমদার আমাদের সঙ্গে ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, এই ডিঅ্যাক্টিভেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যাঁদের কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে গিয়েছে খুব তাড়াতাড়ি তাঁদের একটি আবেদন করার প্রক্রিয়া চালু হবে। অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দিয়ে দেব। সেখানেও সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। আমি আবেদনপত্রও দিয়ে দেব।”
সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের একাধিক গ্রামে বহু বাড়িতে চিঠি আসে। সেখানে আধার কার্ডের নম্বর উল্লেখ করে বলা হয় সেগুলি ‘ডিঅ্যাক্টিভেট’ করা হল। স্বভাবতই এই ঘটনায় রাতের ঘুম উড়ে যায় সেই সব পরিবারগুলির। আধার কার্ড সক্রিয় না থাকলে এ দেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও সক্রিয় থাকবে না। মিলবে অন্যান্য একাধিক পরিষেবাও। সবথেকে বড় কথা, প্রশ্ন উঠবে নাগরিকত্ব নিয়েও।
রবিবারই বীরভূমের সিউড়ির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। জানিয়ে দেন, রাজ্য কড়া পদক্ষেপ করবে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট কাজ না করলে রাজ্যের কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্ক সুবিধা দেবে বলেও জানান মমতা। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে উদ্যোগ নিতেও বলেন তিনি। সোমবারই জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত কোথায় কোথায় আধার কার্ড বাতিলের ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে নবান্নের তরফে বিস্তারিত রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর ।
এই আবহে এবার ময়দানে বিজেপি। শান্তনু এদিন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন শুনেছি। উনি বলেছেন আধার কার্ড নিয়ে কোনও সমস্যা হলে রাজ্য সরকার উদ্যোগ নেবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই এটা কি রাজ্য সরকারের ইস্যু? এটা তো কেন্দ্রের অধীনে। আপনি মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। উনি কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কে চলে আসুন বলছেন। কেওয়াইসি কে দেবে? এই বিভ্রান্তি ছড়ানো ঠিক নয়।”
ইতিমধ্যেই শান্তনু ঠাকুর একটি ইমেল আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়েছেন। তিনি জানান, “আপনারা ইমেল করুন aadharshthakurbari@gmail.com-এ। হোয়াটসঅ্যাপ করুন ৯৬৪৭৫৩৪৪৫৩ নম্বরে। কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করে দেব।”