ভোপাল: ন্যাশনাল হেরাল্ডের বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে একাধিকবার জেরা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। মধ্য প্রদেশে গান্ধীদের সঙ্গে যুক্ত ন্যাশনাল হেরাল্ডের মালিকানাধীন কী কী সম্পত্তি রয়েছে এবং তা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নতুন করে তদন্ত শুরু করবে শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিং। তিনি বলেন, “মধ্য প্রদেশের ন্যাশনাল হেরাল্ডের কী কী সম্পত্তি আছে তা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে। যদি কোনও বাণিজ্যিক ব্যবহার খুঁজে পাওয়া তবে তা সিল করে দেওয়া হবে। জমি গুলি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তা কংগ্রেস নেতাদের নামে বদলে দেওয়া হয়েছিল ঠিক যেমনভাবে দিল্লিতে ন্যাশনাল হেরাল্ডের ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি এখন সনিয়া গান্ধীর নামে।” উল্লেখ্য, গান্ধীদের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রের মেশিন চুরি, নবজীবনের ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া এবং ভোপাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের দায়ের করা বেশ কিছু মামলা রয়েছে।
১৯৮২ সালে ভোপালের প্রেস কমপ্লেক্সে অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল লিমিটেড অথবা এজিএলকে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১.১৪ একর জমি লিজে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় এই সংস্থা ইংরিজি সংবাদপত্র ন্যাশনাল হেরাল্ড, হিন্দি সংবাদপত্র নবজীবন এবং উর্দু দৈনিক কৌমি আওয়াজ প্রকাশ করত। ২০১১ সালে লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিডিএ আধিকারিকরা তদারকি করতে গিয়ে জানতে পারেন সংবাদপত্র প্রকাশের পরিবর্তে ওই জমি বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৯৯২ সালেই সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং সেই সময় থেকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ওই জমি ব্যবহার করা হচ্ছিল। বিডিএ অভিযোগ জানিয়েছিল এজিএল নামের ওই সংস্থার জমির বিভিন্ন অংশ বিক্রি করে দিয়েছিল এবং সেই কারণেই লিজ পুনর্নবীকরণে রাজি হয়নি তারা। ২০১২ সালে নোটিস পাঠিয়ে জমি ফিরিয়ে দিতে বলে বিডিএল।
সনিয়া-রাহুলের মতো কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতানেত্রীকে ইডির জেরা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সনিয়া-রাহুলের জেরা নিয়ে ইডি সদর দফতরের বাইরে বিক্ষোভও দেখিয়েছে কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এই মামলায় গান্ধী পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতারির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ন্যাশনাল হেরাল্ডের বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় আগামী দিনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কী পদক্ষেপ করে সেটাই এখন দেখার।