নয়া দিল্লি: তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁল বীরেন্দ্র সেওয়াগের পাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির নজফগড়ে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগের দেওয়া তথ্য় অনুযায়ী রবিবার (২১ মে), নজফগড়ের তাপমাত্রা ছিল ৪৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মরসুমের এটাই ছিল দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তবে শুধু নজফগড়েই নয়, তাপমাত্রার এই টি২০ সুলভ ব্যাটিং দেখা গিয়েছে জাতীয় রাজধানীর অন্যান্য অংশেও। আইএমডির তথ্য অনুসারে, নারেলা এবং পিতমপুরায় পারদ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে, আয়ানগরে ৪৪ ডিগ্রি, পালামে ৪৪.২ ডিগ্রি, গুরগাঁওয়ে ৪৩.৮ ডিগ্রি ইত্যাদি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোম ও মঙ্গলবারও আবহাওয়ার পরিস্থিতি একইরকম থাকবে। বুধবার থেকে বৃষ্টি হয়ে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।
ফলে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় সমগ্র দিল্লি জুড়েই তাপপ্রবাহ চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আইএমডি জানিয়েছে, সমতলে তাপমাতরা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে গেলেই তাপপ্রবাহের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। আইএমডি আরও জানিয়েছে, বর্তমানে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সক্রিয় রয়েছে। এই পশ্চিমি ঝঞ্ঝাই বুধবারের মধ্যে দিল্লিকে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি আনতে পারে। বৃষ্টির পর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। এদিকে এই তীব্র গরমের দাপটে রাজধানী এলাকায় দারুণভাবে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। এসি, ফ্যান ছাড়া মানুষ থাকতে পারছেন না। এই অবস্থায় রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজধানীর বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল। সেই সময় ৬,৫৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করেন দিল্লিবাসী। গত বছর গরমকালে দিল্লির সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ খরচ ছিল ৭,৬৯৫ মেগাওয়াট।
দিল্লিতে যে এই ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহের পরিবেশ তৈরি হবে, তার কোনও পূর্বাভাস অবশ্য আবহাওয়াবিদরা দিতে পারেননি। গত মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে আইএমডি দিল্লির আঞ্চলিক প্রধান কুলদীপ শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, “উত্তর-পশ্চিম ভারতে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে, মে মাসের প্রথমার্ধে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কম। পরবর্তী পশ্চিমী ঝঞ্ঝাটি উত্তর-পশ্চিম ভারতের দিকে এগোচ্ছে। তাই, আগামী ৭ দিন, আমরা দিল্লিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি আশা করছি না। তবে তাপমাত্রা বাড়বে।” তবে, হরিয়ানা, দিল্লি রাজধানী অঞ্চল, উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশ এবং উত্তর-পূর্ব রাজস্থানে ধুলো-যুক্ত বাতাস বইবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, “বায়ুমণ্ডল শুষ্ক, এবং উত্তপ্ত বায়ুমণ্ডলের কারণে মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। ওই অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা চলে যাওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। যা ভূপৃষ্ঠ থেকে ধূলিকণা তুলে বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং প্রধানত তা মাটি থেকে ১-২ কিলোমিটার উচ্চতায় ভেসে বেরাচ্ছে।”