মুম্বই : মহারাষ্ট্রের রায়গড় উপকূল থেকে বাজেয়াপ্ত করা হল অস্ত্র বোঝাই দুটি নৌকো। রায়গড়ের হরিহরেশ্বর ঘাটে নৌকোটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নৌকো থেকে উদ্ধার হয়েছে AK-47 রাইফেল সহ প্রচুর অস্ত্র। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩ টি AK-47, রাইফেল ও কার্তুজ। এই অস্ত্র উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুম্বই জুড়ে। এর আগে ২৬/১১ তে মুম্বই হামলার সময় এভাবেই ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল হামলাকারীরা। সেরকমই কোনও হামলার পুনরাবৃত্তির ছক কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মহারাষ্ট্র প্রশাসন।
এই অস্ত্রবোঝাই নৌকো উদ্ধারের পরই মহারাষ্ট্র উপকূলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হাই অ্য়ালার্ট জারি করা হয়েছে মুম্বই উপকূল জুড়ে। ইতিমধ্যেই এলাকা ঘিরে ফেলে সেই নৌকোর আরোহীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে তদন্ত। প্রসঙ্গত কিছুদিন বাদেই মহারাষ্ট্রে সমারোহে পালন হবে গণেশ চতুর্থী। এই উৎসব উপলক্ষে বহু মানুষের জমায়েত হয়। আর এই অস্ত্রবোঝাই নৌকো উদ্ধারের স্থান থেকে মুম্বইয়ের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। তাই এরকম বড় উৎসবের আগে বিপুল অস্ত্র উদ্ধারে চিন্তিত প্রশাসন। এই ঘটনায় সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডকে (Anti Terror Squad) তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন রায়গড়ের সাংসদ সুনীল তাতকারে। মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডও এই তদন্তে হাত মেলাবে বলে জানা গিয়েছে।
এই অস্ত্র উদ্ধারের পিছনে কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ষড়যন্ত্র ছিল কি না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে প্রাক্তন এনএসজি কমান্ডার দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘অতীতেও যখন মুম্বইতে বোমা হামলা হয়েছিল এবং দাউদ ইব্রাহিমের মাধ্যমে ভারতে আরডিএক্স এসেছিল তখন রায়গড় বেল্ট দিয়েই এসেছিল। সেই সময় সমুদ্রে অত নিরাপত্তা ছিল না। কিন্তু ২৬/১১-র পর এখন নিরাপত্তা ব্য়বস্থা অনেক কঠোর হয়েছে। প্রতি মুহুর্তে নজরদারি চালানো হয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এখানে অবাক হওয়ার মতো বিষয় হল এই কড়া নজরদারির মধ্য়ে দিয়েও কীভাবে অস্ত্র বোঝাই নৌকো ঢুকল। তিনি বলেন, ‘এই অবশ্যই চিন্তার বিষয়।’ গণেশ চতুর্থীর আগে এইভাবে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার ঘিরে তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থী হল অনেক বড় জনগণের উৎসব। সেই সময় প্রায় পুরো মহারাষ্ট্র রাস্তা নেমে পড়ে। সেই সময় এরকম অস্ত্র যদি কারও হাতে এসে থাকে তাহলে মহারাষ্ট্র সরকারের জন্য তা বড় চিন্তার বিষয়।’তিনি আরও বলেছেন, ‘গণেশ চতুর্থীতে মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ মানুষ ভিড় করেন। সেই সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব সাংঘাতিক হবে।’ এটা সাম্প্রদায়িক দিকেও মোড় নিতে পারেন বলে মনে করছেন দীপাঞ্জন চক্রবর্তী।