অযোধ্যা: অযোধ্যার রাম মন্দিরে বোমা হামলার হুমকি। অযোধ্যায় রাম জন্মভূমিতে ধীরে ধীরে রূপ পাচ্ছে রাম মন্দির। নির্মিয়মান এই মন্দিরই বোমা হামলায় উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে এই হুমকি দেওয়া হয়। হুমকি ফোন কলে বলা হয়েছে, ২১শে সেপ্টেম্বর রামং মন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটবে। উত্তর প্রদেশ পুলিশের জরুরি নম্বর ১১২-য় ফোন করে হুমকি দেওযা হয়। আর এই তথ্য পেতেই হইচই পড়ে গিয়েছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ মহলে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিতেও। দ্রুত তথ্যদাতা অর্থাৎ, কে ফোন করে এই বিষয়ে সতর্ক করল, সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেরিলির এক কিশোর পুলিশকে ফোন করে এই তথ্য দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কন্ট্রোল রুমে এই তথ্য আসার সঙ্গে সঙ্গেই অযোধ্যায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়। যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় শুরু হয় তদন্ত। পাশাপাশি কন্ট্রোল রুমে কে ফোন করেছিল, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, কন্ট্রোল রুমে ফোন করে শুধু বলা হয়েছিল যে ২১ সেপ্টেম্বর রাম মন্দিরে বিস্ফোরণ হবে। তারপরই ফোন কেটে দেওয়া হয়েছিল। কন্ট্রোল রুম থেকে ওই নম্বরে পাল্টা ফোন করে তথ্যদাতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, বারংবারই উল্টো দিক থেকে ফোন কেটে দেওয়া হয়। তাতে পুলিশের সন্দেহ আরও বেড়েছিল।
তবে, পরে জানা যায়, ফোনকলটি এসেছিল বেরেলির ফতেহগঞ্জ পূর্ব এলাকার ইতাউরিয়া গ্রাম থেকে। এই খবর পাওয়ার পরই, পুলিশ ওই ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েছিল। জানা যায়, ফোনকলটি করেছিল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র। এরপর ওই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশি জেরার মুখে সে জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে সে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখছিল। সেই সময়, একটি ভিডিয়ো তার নজরে আসে, যেখানে ২১ সেপ্টেম্বর অযোধ্যার নির্মিয়মান এই রাম মন্দিরে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই ভিডিয়োটি দেখার পরই, তার মনে হয়েছিল বিষয়টি পুলিশকে জানানো উচিত। তাই সে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এই বিষয়ে আরও তথ্য পেতে শিশুটিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টিকে একেবারেই হাল্কাভাবে নিচ্ছে না পুলিশ। মন্দির চত্বর-সহ গোটা অযোধ্যাতেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই কিশোর কোন ভিডিও দেখে পুলিশকে ফোন করেছিল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ভিডিয়োটি চিহ্নিত করে, কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে ইউটিউব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই ভিডিয়ো আপলোডকারীকে শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে শনাক্ত করে এই বিষয়ে আরও তদন্ত করতে চাইছে পুলিশ।
এদিকে , রাম মন্দির নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। ২০২৪-এর ২৪ জানুয়ারই এই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। এই তারিখ ঘোষণার পর, অযোধ্যা রাম মন্দির দর্শনের জন্য বুকিং শুরু হবে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক চলার পর, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত জমিটি রাম মন্দির ট্রাস্টকে বরাদ্দ করেছিল। এই ট্রাস্ট গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ভারত সরকারকে। ২০২০-র ৫ অগস্ট মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিন বছরে অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রথম পর্বের নির্মাণকাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ১৮,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মন্দির নির্মাণ করছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো সংস্থা।