নয়া দিল্লি: করোনাভাইরাস টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার নিয়মে সামান্য বদল আনল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেসব ভারতীয় বিদেশ ভ্রমণ করবেন, তাঁরা প্রয়োজনে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। বিষয়টি নির্ভর করবে, কোনও যাত্রীর গন্তব্যস্থলের উপর। সেই দেশের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি মেনেই তাঁরা ভারত সরকারের নির্ধারিত সময়ের আগেই বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। এদিন এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাক্তার মনসুখ মাণ্ডব্য বলেছেন, ‘যে সকল ভারতীয় নাগরিক ও ছাত্র-ছাত্রী বিদেশে যাবেন, তাঁরা এখন গন্তব্য দেশের নির্দেশিকা মেনে সতর্কতামূলক ডোজ নিতে পারবেন। এই নতুন সুবিধাটি শীঘ্রই কোউইন পোর্টালে উপলব্ধ হবে’।
ভারতে এতদিন পর্যন্ত কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর, অন্তত ৯ মাস গেলে তবেই বুস্টার ডোজ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হত। তবে, এই ব্যবস্থায় সমস্যায় পড়েছিলেন বিদেশগামী ভারতীয় নাগরিকরা। প্রায় বছর দুই পর, বর্তামানে গোটা বিশ্বেই কোভিড পরিস্থিতি তুলনায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মহামারি এখনও পুরোপুরি শক্তি না হারালেও, তার মধ্যেই শুরু হয়েছে দৈনিক কর্মকাণ্ড। এই অবস্থায় অনেক ভারতীয় নাগরিককেই কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার কারণে বিদেশে যেতে হচ্ছে। ভারত সরকারের বুস্টার ডোজ নেওয়ার নিয়মের কারণে, তাদের মধ্যে অনেককেই বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বুস্টার ডোজ না নেওয়া থাকলে, এখন অনেক দেশই যাত্রীদের সেই দেশে ভ্রমণের অনুমতি দিচ্ছে না।
এই সমস্যাটি উপলব্ধি করেই, বিদেশযাত্রী ভারতীয়দের জন্য, বুস্টার ডোজ বা সতর্কতামূলক ডোজ নেওয়ার নিয়ম বদলের বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছিল মোদী সরকার। ভারতে করোনাভাইরাস টিকাকরণের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে ন্যাশনাল টেকনিকাল অ্যাডভাইসারি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন। বুস্টার ডোজ নেওযারর নিয়মটি শিথিল করা যায় কিনা, তা যাচাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এই গোষ্ঠীকেই। তারাই বিদেশযাত্রী ভারতীয়দের জন্য বাধ্যতামূলক নয় মাসের ব্যবধানের আগেই প্রয়োজন অনুসারে সতর্কতামূলক ডোজ বা বুস্টার শট নেওয়ার সুপারিশ করেছে। এরপরই এদিন সিদ্ধান্তটিতে সিলমোহর দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি তারিখ থেকেই ভারতে কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছিল। প্রথমে অবশ্য সতর্কতামূলক তৃতীয় ডোজটি সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টসলাইন কর্মী এবং সহ-অসুস্থতা থাকা ষাটোর্ধ্ব নাগরিকদের মধ্যেই। এরপর মার্চ মাসে সহ-অসুস্থতার মানদণ্ড সরিয়ে সকল ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই বুস্টার ডোজ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গত ১০ এপ্রিল, পরিধি আরও বাড়িয়ে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার সকলের জন্য বুস্টার ডোজের সুবিধা উন্মুক্ত করা হয়েছিল। এবার আরও একটু শিথিল করা হল নিয়ম। তবে, এই সুবিধা শুধুমাত্র বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রেই মিলবে। বাকিদের এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর, বুস্টার ডোজের নেওয়ার জন্য ৯ মাস অপেক্ষা করতে হবে।