Lipstick Plant: অরুণাচলে এই বিরল গাছে ধরছে থোকা থোকা ‘লিপস্টিক’! একশো বছর পর আবার

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jun 10, 2022 | 7:00 AM

Lipstick Plant in Arunachal Pradesh: অরুণাচল প্রদেশে ১০০ বছর পর আবার দেখা মিলল 'লিপস্টিক প্ল্যান্ট' 'অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান' গাছের।

Lipstick Plant: অরুণাচলে এই বিরল গাছে ধরছে থোকা থোকা লিপস্টিক! একশো বছর পর আবার
লিপস্টিক গাছ

Follow Us

ইটানগর: ঠিক যেন ছড়া ছড়া লিপস্টিক ধরে রয়েছে গাছে। হ্যাঁ, দূর থেকে দেখলে এরকমই মনে হতে বাধ্য। আসলে, ওই ওষ্ঠরঞ্জনীর মতো অংশটি হল ফুল। তাই গাছটির মুখে মুখে নাম হয়েছিল ‘লিপস্টিক প্ল্যান্ট’ বা লিপস্টিক গাছ। আসল নাম বা বৈজ্ঞানিক নামটা বেশ খটমট, ‘অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান’। প্রায় ১০০ বছর আগে, অরুণাচল প্রদেশে এই গাছ চিহ্নিত করা গিয়েছিল, তবে তারপর থেকে আর দেখা যায়নি। সম্প্রতি ফের দেখা মিলল এই বিরল গাছের।

পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯১২ সালে অরুণাচল প্রদেশ থেকে এই গাছ সংগ্রহ করেছিলেন ব্রিটিশ উদ্ভিদবিদ আইজ্যাক হেনরি বার্কিল। সেই গাছ প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন আরেক ব্রিটিশ উদ্ভিদবিদ স্টিফেন ট্রয়েট ডান। তবে তারপর থেকে আর এই গাছ হারিয়েই গিয়েছিল। তবে চিরতরে নয়। সম্প্রতি ‘বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ বা ‘বিএসআই’-এর গবেষকরা অরুণাচল প্রদেশের আনজাউ জেলার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফের এই বিরল গাছটিকে খুঁজে পেয়েছেন। ‘কারেন্ট সায়েন্স জার্নালে’ সেই পুনরাবিষ্কারের বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন ‘বিএসআই’-এর বিজ্ঞানী কৃষ্ণা চাউলু।

নিব্ন্ধ অনুসারে, ‘অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান’ গাছটি, ‘অ্যাস্কিনান্থাস জ্যাক’ উদ্ধিদ বংশের এক সদস্য। ‘অ্যাস্কিনান্থাস জ্যাক’ একটি এপিফাইটিক চিরহরিৎ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এশীয় উদ্ধিদ বংশ। এর মোট ১৭৪টি প্রজাতি রয়েছে, যার বেশিরভাগই দেখা যায় দক্ষিণ চিন থেকে শুরু করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় এশীয় দেশগুলি পর্যন্ত বিস্তৃত অংশে। ভারতে এই উদ্ভিদের ২৬ টি প্রজাতি রয়েছে। এরই একটি ‘অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান’। নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, ‘অ্যাস্কিনান্থাস’ নামটি এসেছে গ্রীক শব্দ অ্যাস্কিন (aischyn) এবং অ্যান্থোস (anthos) থেকে। অ্যাস্কিন কথাটির অর্থ লজ্জা পাওয়া বা বিব্রত হওয়া, এবং অ্যান্থোস মানে ফুল।

জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে, আনজাউ জেলার হিউলিয়াং এবং চিপ্রু নামে দুই প্রত্যন্ত এলাকায় ফুল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণা চাউলু এবং তাঁর গবেষক দল। সেখান থেকে অঞ্চল থেকে অ্যাস্কিনান্থাস গাছটির কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন বিএসআই-এর বিজ্ঞানীরা। এরপর গাছটি শনাক্ত করার জন্য কড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেই সঙ্গে পর্যালোচনা করা হয় প্রাসঙ্গিক নথিপত্র। এরপরই জানা যায়, এটি ‘অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান’। ১৯১২ সালে বার্কহিল সংগ্রহ করার পর থেকে এই গাছ আর ভারতে দেখা যায়নি।

কারেন্ট সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে বিজ্ঞানী চাউলু লিখেছেন, ‘অ্যাস্কিনান্থাস’ গণের কিছু প্রজাতির গাছের ক্ষেত্রে, তাদের ফুলের দলমণ্ডল নলাকার লাল রঙের হয় বলে এগুলি লিপস্টিক উদ্ভিদ হিসাবে পরিচিত। তবে, ‘অ্যাস্কিনান্থাস মনেটারিয়া ডান’-এর পাতাগুলি বেশ মোটা হয়। যা, এই গাছটিকে আকারগত দিক থেকে ভারতের অন্যান্য পরিচিত অন্যান্য ‘অ্যাস্কিনান্থাস’ প্রজাতির মধ্যে অনন্য করে তুলেছে। এই পাতাগুলির উপরের পৃষ্ঠ সবুজাভ এবং নীচের পৃষ্ঠ বেগুনি-সবুজ রঙের হয়। পাতাগুলি দেখতে অনেকটাই পুদিনার মতো। আর এই কারণেই গাছটির নামের দ্বিতীয় অংশটি হল মনেটারিয়া।

কৃষ্ণ চাউলু আরও বলেছেন, অরুণাচল প্রদেশ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। আরও গভীর অনুসন্ধান চালানো প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে আরও অনেক হারিয়ে যাওয়া গাছ, কিংবা সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির কোনও গাছের সন্ধান মিলতে পারে।

Next Article