নয়া দিল্লি: ভরণপোষণের মামলার ক্ষেত্রে প্রমাণ যাচাই করার জন্য স্বামী কি তথ্য জানার অধইকার আইন বা আরটিআই-এর মাধ্যমে স্ত্রীর আয়ের বিবরণ চাইতে পারেন? সম্প্রতি, সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশন জানিয়েছে, পারেন। এক ভরণপোষম সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ যাচাইয়ের জন্য আরটিআই-এর মাধ্যমে তার স্ত্রীর আয়ের বিবরণ জানতে চেয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু, তথ্য আধিকারিক তাঁর আবেদন খারিজ করে জানিয়েছিলেন, এটি ওই মহিলার ব্যক্তিগত তথ্য। আরটিআই-এর মাধ্যমে এটা জানা যাবে না। তবে, পূর্বের বেশ কয়েকটি মামলার কথা উল্লেখ করে তথ্য কমিশনার সরোজ পুনহানি, শুধুমাত্র স্ত্রীর করযোগ্য আয় বা মোট আয়ের বিশদ ওই পুরুষকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারকে।
আবেদনকারী তাঁর স্ত্রীর মোট আয়ের বিশদ জানতে চেয়ে ২০২২-এর ১০ অক্টোবর একটি আরটিআই আবেদন করেছিলেন। ২০২৩-এর ২ ফেব্রুয়ারি, সেই আবেদন খারিজ করে সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার জানান, তথ্য অধিকার আইনের ৮(১) ধারায় এই ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা নিষিদ্ধ। নাম, ঠিকানা, শারীরিক, মানসিক এবং মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, বিভইন্ন পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর, গ্রেড এবং উত্তরপত্র, যোগ্যতা, কর্মক্ষমতা, মূল্যায়ন প্রতিবেদন, মেডিকেল রেকর্ড, সম্পদ, ঋণ, আয়কর রিটার্ন, বিনিয়োগ, ধার দেওয়া এবং ধার নেওয়া ইত্যাদি ব্যক্তিগত তথ্য হিসেবে গন্য করা হয়। এই ধরনের তথ্য গোপন রাখতে হয়। শুধুমাত্র বৃহত্তর জনস্বার্থে এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা যায়।
১৬ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারী, এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রথম আবেদন করেছিলেন। তার সেই আবেদনও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এরপর, তিনি দ্বিতীয় আবেদনটি করেছিলেন সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনে। তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ভরণপোষণের মামলা দায়ের করেছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। সেই মামলার প্রমাণের জন্যই তিনি তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর আয়ের বিবরণ চেয়েছেন।
শুনানির সময়, কানারা ব্যাঙ্ক বনাম সিএস শ্যাম, গিরিশ রামচন্দ্র দেশপান্ডে বনাম সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনার, আরকে জৈন বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়ার মতো বেশ কয়েকটি মামলার উল্লেখ করে তথ্য কমিশনার সরোজ পুনহানি জানান, আগেই আদালত পর্যবেক্ষণ করেছে যে, স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধের ক্ষেত্রে ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ গোপন রাখার মৌলিক সুরক্ষা পাওয়া যাবে না। কাজেই এই ক্ষেত্রেও স্বামীকে, স্ত্রীর আয়ের বিবরণ দিতে হবে। এরপরই, তিনি ১৫ দিনের মধ্যে ওই আবেদনকীরাকে এই তথ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তথ্য আধিকারিককে।