গুয়াহাটি : অসমে বন্যা প্রতি বছরের দুর্যোগ। চলতি বছরে তো খুব কম সময়ের ব্যবধানে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বন্যার কবলে পড়েছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। বন্যার জেরে অসম এখন জলমগ্ন। সেখান থেকে ফুটে উঠছে করুণ দৃশ্য। গাড়ির বদলে চলছে নৌকা। বাসস্থান হারিয়ে কয়েক লক্ষ মানুষ হাইওয়েতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। সেখানেই চলছে রান্না, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম। আর এবার রাস্তায় কেমোথেরাপি দেওয়ার ঘটনা সামনে এল অসমে। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা এনডিটিভির এক রিপোর্ট অনুযায়ী হাসপাতাল জলের তলায় যাওয়ায় ক্যানসার রোগীদের রাস্তায় কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে অসমে।
অসমের বরাক উপত্যকায় অবস্থিত রয়েছে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল এবং গবেষণা কেন্দ্র। তবে বন্যার জেরে এই হাসপাতাল বর্তমানে জলমগ্ন। রিপোর্ট অনুযায়ী, হাসপাতালটি বেশ কয়েকদিন আগেই প্লাবিত হয়েছে। এবং সেখানে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে হাসপাতাল প্রশাসকরা হাসপাতালটি খোলা রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালটি চালু রাখার জন্য নৌকার প্রয়োজন পড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী এবং হাসপাতাল কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে নাকি নৌকা দেওয়ার আবেদন করেছে।
হাসপাতালের রিসোর্স-মোবিলাইজেশন বিভাগের প্রধান ধর্মানা আর বলেন, ‘কেমোথেরাপি এবং প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের মতো পদ্ধতিগুলি বাইরে করা যেতে পারে। আমরা তাই সেই কাজগুলো আপাতত রাস্তায় করছি। যেখানে জলাবদ্ধতা কম রয়েছে, সেরম জায়গা খুঁজে সেখানে রোগীদের দেখআ হচ্ছে।’ তবে কারোর যদি অস্ত্রপচার প্রয়োজন হয়, তখন? ধর্মানা বলেন, ‘যদি কারো জরুরী অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় আমরা সেই অপারেশন করছি। তবে অ্যানেস্থেশিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নাইট্রাস গ্যাসের ঘাটতির কারণে আমরা সামগ্রিক অপারেশনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে ডাক্তাররা প্রায় চারটি অপারেশন করেছেন। বন্যার আদে সপ্তাহে ২০টি করে অপারেশন করা হত বলে জানান তিনি। পানীয় জলের টাটকা সরবরাহ, ব্যাক-আপ পাওয়ার, ডিজেল রোগীদের জন্য খাদ্য এবং রান্নার জন্য জ্বালানীর প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
নিকটবর্তী বরাক নদী পার্শ্ববর্তী রাজ্যের পাহাড় থেকে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীর জল বিপদসীমার ঊর্ধ্বে যাওয়ায় বরাক উপত্যকায় এই বন্যা পরিস্থিতি। অপরদিকে অসমের অন্যত্র ব্রহ্মপুত্র নদের রোষের মুখে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের কাছে অবস্থিত অন্যান্য অনেক এলাকায় বন্যাজল অবশ্য সম্প্রতি কমতে শুরু করেছে। তবে কাছাড় এবং এর পার্শ্ববর্তী করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলার পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ।