নিউ দিল্লি: সকাল থেকে যে আশঙ্কাটা করা হচ্ছিল, বিকেল হতে হতে সত্যি হল সেটাই। কংগ্রেসের ঘরোয়া কোন্দল তুঙ্গে ওঠায় বিধানসভা নির্বাচনের বছরখানেক আগেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং(Amarinder Singh)। তবে তিনি যে ইস্তফা দেওয়ার পথে এগোচ্ছেন সেটা কার্যত দুপুরের মন্তব্য় থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি বলেন, ” আজ সকালেই সোনিয়া গান্ধীকে(Sonia Gandhi) জানিয়েছি। আমি অপমানিত বোধ করছিলাম। এত অপমান সহ্য করে দলে থাকা সম্ভব নয়।” সিং স্পষ্ট বলেন,” এই ধরনের অপমান যথেষ্ঠ। তিনবার অপমান করা হল। এই হেনস্থা সহ্য করে আমি দলে থাকতে পারব না।” এই বিষয়ে অমরিন্দর সিং-এর ছেলে রণিন্দর সিং অফিশিয়ালি টুইটে জানিয়েছেন, ইস্তফা দেওয়ার সময় রাজভবনে বাবার সঙ্গে থাকতে পেরে তিনি গর্বিত।
এর আগে তাঁকে সিং-কে পদত্যাগ নিয়ে দলের তরফ থেকেই চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি সেই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা জানিয়েছিলেন। ফলত কংগ্রেসের অন্দরে মত বিরোধ তৈরি হয়।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, দলেরই ৫০ জন এমএলএ সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন অমরিন্দরকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ নিয়ে। গতকাল মধ্যরাতে একটি টুইট করে কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে আজ বিকেল পাঁচটায় বিধায়কদের নিয়ে একটি জরুরী বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পঞ্জাব বিধায়কদের থেকে ইতিমধ্যেই দলকে চাপে রাখা হচ্ছিল যাতে ক্যাপ্টেনের জায়গায় নিয়ে আসা হয় অন্য কাউকে।
কংগ্রেসের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল কয়েকজনের নাম। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুনীল ঝাকড়, প্রাক্তন পাঞ্জাব কংগ্রেস প্রধান প্রতাপ সিংহ বাজওয়া। নামের তালিকায় রয়েছেন বেয়ান্ত সিঙয়ের নাতি ও বিধায়ক রভনীত সিং বিট্টু। রাহুল গান্ধীকে সাধুবাদ জানিয়ে সুনীল ঝাকড় টুইটে লিখেন, কংগ্রেস নেতৃত্বের এই সাহসী পদক্ষেপ শুধু কর্মীদের মুগ্ধই করে না পাশাপাশি বিরোধী দলের আত্মবিশ্বাসও নাড়িয়ে দেয়।
সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসে গুরুত্ব বেড়েছে সিধুর। গুরুত্ব কমেছে অমরিন্দরের। কয়েকমাস পূর্বে সুনীল জাখরকে সরিয়ে সিধুকে কংগ্রেস সভাপতি করা হয়। তখন থেকেই ক্রমশ দলে ব্রাত্য হতে থাকেন ক্যাপ্টেন সিং। জানা যায়, সেই সময়ই নাকি অমরিন্দরকে ইস্তফা দিতে বলে হাই কমান্ড। অন্যদিকে দলে বাড়তে থাকে সিধুর গুরত্ব। চারজন মন্ত্রী ও ২৪ জন ক্যাপ্টেন সিঙের বিরুদ্ধে নতুন করে বিদ্রোহ ঘোষণা করে জানিয়েছিলেন যে তাদের অমরিন্দরের নেতৃত্বের উপর ভরসা নেই।
উল্লেখ্য, সামনেই রয়েছে পঞ্জাবে নির্বাচন। কিন্তু ভোটের প্রচারে মনদেওয়ার বদলে দলের অন্দরে নেতা-মন্ত্রীদের ক্ষোভ মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: Child Marriage: ‘বাল্য বিবাহে’ সায় দিচ্ছে অশোক গেহলটের সরকার? কী রয়েছে সংশোধনী বিলে