নয়া দিল্লি: প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে সোজাপথে নয়, ঘুরপথে বাড়ানো হচ্ছিল ওষুধ বিক্রি। এবার কাঠগড়ায় ডোলো-৬৫০ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্য়াক্স বা সিবিডিটির তরফে জানানো হল, অনৈতিকভাবে ওষুধ বিক্রি বাড়াচ্ছিল ডোলো-৬৫০ প্রস্তুতকারক সংস্থা। নিজেদের প্রস্তুত করা ওষুধের বিক্রি বাড়াতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ওষুধ ও অন্যান্য উপহার চিকিৎসক ও চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করেছিল অভিযুক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা। অভিযোগ, মাইক্রো ল্যাবস লিমিটেড নামক ওই সংস্থার তরফে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও নানা উপঢৌকন দিয়ে চিকিৎসক ও এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিজেদের ওষুধের প্রচার চালাতে বলা হত।
গত ৬ জুলাই আয়কর বিভাগ ৯ রাজ্য মিলিয়ে মাইক্রো ল্যাবস লিমিটেডের মালিকানাধীন ৩৬টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা নথির ভিত্তিতেই এরপর ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্য়াক্সেস। বুধবার তদন্তকারী সংস্থার তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে হিসাব বহির্ভূত ১.২০ কোটি টাকা নগদ এবং বিপুল সোনা ও হিরের গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
বাজেয়াপ্ত করার অর্থ ও গয়নার পাশাপাশি একাধিক ডিজিটাল ও কাগজের নথিও উদ্ধার ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা মাইক্রো ল্যাবস লিমিটেডের বেআইনি পদ্ধতিতে ব্যবসা চালানোর প্রমাণ দেয়। সিবিডিটির তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধার করার নথিগুলিতে দেখা গিয়েছে যে সেলস ও মার্কেটিংয়ের নামে সংস্থাটি বিনামূল্য ওষুধ সহ নানা জিনিস বিতরণ করেছে এবং নিজেদের হিসাবের খাতায় তা অপ্রয়োজনীয় খরচ হিসাবে উল্লেখ করেছে।
সিবিডিটির আরও দাবি, সংস্থার তরফে বিনামূল্যে যে সমস্ত কিছু দেওয়া হত চিকিৎসক ও এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের, তার মধ্যে ভ্রমণের খরচ, দামী উপহার ছিল। ওষুধের প্রচার, সেমিনার, মেডিক্যাল অ্যাডভাইসরির নামে এই বেআইনি কাজ চলত। আনুমানিক প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল এই খাতে। সিবিডিটির তরফে সরাসরি সংস্থার নাম উল্লেখ না করা হলেও, সাম্প্রতিক আয়কর হানার পরই এই বিবৃতিতে স্পষ্ট যে মাইক্রো ল্যাবস লিমিটেডের কথাই বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডোলো-৬৫০ একটি বহুল প্রচলিত অ্যান্টিপাইরেটিক ও অ্যানালজেসিক ওষুধ, যা জ্বর কমানো এবং ব্যাথা-বেদনা প্রশমনের কাজ করে। করোনাকালেও এই ওষুধ প্রচুর ব্যবহার করা হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর শুধুমাত্র ডোলো-৬৫০-র প্রায় ৩৫০ কোটি ট্যাবলেট বিক্রি হয়েছে। বার্ষিক প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আয় হয় এই ওষুধ বিক্রি করে।