নয়া দিল্লি: তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, অর্থাৎ, সিবিআই-এর এক অফিসারকে। যে চাপের কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। সোমবার, এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। সিবিআই অফিসারদের মিথ্যা মামলা সাজানোর জন্য কেন এত চাপ দেওয়া হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন সিসোদিয়া। মণীশ সিসোদিয়া বলেন, “আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য এক সিবিআই অফিসারকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেই মানসিক চাপ নিতে পারেননি এবং আত্মহত্যা করেছেন… আমি প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, কেন অফিসারদের এত চাপ দেওয়া হচ্ছে যে তারা এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন?”
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে জিতেন্দ্র কুমার নামে সিবিআই-এর একজন আইনি উপদেষ্টা দক্ষিণ দিল্লিতে তাঁর নিজ বাসভবনেই আত্মঘাতী হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার, সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ, ডিফেন্স কলোনি থানায় একটি ফোন এসেছিল। জানানো হয়েছিল, জিতেন্দ্র কুমারকে তাঁর বাসভবনে ছাদ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এরপরই এক ফরেনসিক মোবাইল টিম-সহ অপরাধ দমন শাখার একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তারাই সিবিআই-এর ওই আইনি উপদেষ্টার দেহ উদ্ধার করেছিল।
গত নভেম্বর মাসে দিল্লির নয়া আবগারি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। তবে, সেই নয়া আবগারি নীতি প্রণয়ন এবং কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় সাক্সেনা এই অভিযোগের বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই গত মাসে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে মণীশ সিসোদিয়া-সহ ১৩ জনের নামে এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল। মণীশ সিসোদিয়ার দিল্লির বাসভবন-সহ তাঁর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছিল।
এদিনও, বিজেপির পক্ষ থেকে এই মামলার বিষয়ে একটি ‘স্টিং ভিডিও’ প্রকাশ করা হয়েছে। বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র দিল্লির মদ্য ব্যবসায়ীদেরও ভিডিও তৈরি করে, মণীশ সিসোদিয়া এবং মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে কত টাকা করে তাদের কমিশন দিতে হতো, সেই বিষয়ে নির্ভয়ে তথ্য প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন। টুইটে সম্বিত পাত্র বলেছেন, “এখন, আপনার আর পালানোর কোনও পথ নেই, মনীশ সিসোদিয়াজি। যখন কেজরীবালজি ক্ষমতায় এসেছিলেন, তিনি তিনি জনগণকে যে কোনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন করতে বলেছিলেন। ঠিক সেটাই করা হয়েছে। স্টিং মাস্টার কেজরীবালজির বিরুদ্ধেই একটি স্টিং অপারেশন করা হয়েছে।”
স্টিং অপারেশনের ভিডিয়োটিতে কুলবিন্দর মারওয়াকে দেখা গিয়েছে। তিনি সানি মারওয়ার বাবা। সিবিআই-এর এফআইআর-এ ১২ নম্বর নামটি ছিল সানির। সম্বিত পাত্র দাবি করেছেন, স্টিং অপারেশনে জানা গিয়েছে, লাভের ৮০ শতাংশ কেজরীবাল, সিসোদিয়া এবং তাঁদের বন্ধুদের কাছে যাবে। বাকি ২০ শতাংশ ব্যবসায়ীরা যে কোনও ভাবে বিক্রি করতে পারতেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, তারা এমনভাবে লুটপাট চালাচ্ছিল যে, একটি মদের বোতলের সঙ্গে আরেকটি বোতল বিনামূল্যে দিলেও তাদের লাভ হত।