নয়া দিল্লি: সব মিলিয়ে ইউকো ব্যাঙ্কের ৮২০ কোটির টাকার জালিয়াতির অভিযোগ। আর এই অভিযোগের তদন্তে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ এবং কর্নাটক-সহ দেশের প্রায় ১৩টি স্থানে অনুসন্ধান চালাল সিবিআই। ব্যাঙ্কের ইমিডিয়েট পেমেন্ট সার্ভিস বা আইএমপিএস ব্যবহার করে এই বিপুল অর্থের জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে নিজেদেরই দুই সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে ইউকো ব্যাঙ্ক। এফআইআর-এ বলা হয়েছে, ‘ভুলবশত’ ব্যাঙ্কের কোষাগার থেকে চলতি বছরের নভেম্বরে আইএমপিএস ব্যবহার করে ব্যাঙ্কের ৪১,০০০ অ্যাকাউন্টধারীর অ্যাকাউন্টে ওই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।
এই অভিযোগের তদন্তে, গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর) অভিযুক্ত, ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা এবং আরও কয়েকজন ব্যক্তির বাসভবন এবং কার্যালয়ে হানা দিয়েছিল সিবিআই। কলকাতা এবং ম্যাঙ্গালোর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় এই অনুসন্ধান অভিযান চালান হয়। আইএমপিএস লেনদেন কেলেঙ্কারির অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ এবং নথি সংগ্রহ করাই ছিল কেন্দ্রীয় সংস্থার লক্ষ্য। অনুসন্ধানের সময়, সিবিআই বেশ কিছু মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার সিস্টেম, সংরক্ষিত ই-মেইল, এবং ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড-সহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক প্রামাণ্য বস্তু বাজেয়াপ্ত করেছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রমাণগুলি তদন্তের কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কীভাবে এই ৮২০ কোটি টাকার জালিয়াতি করা হয়েছে, তার তচাবিকাঠি এই যন্ত্রগুলিতেই লুকিয়ে আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
সিবিআই জানিয়েছে, ১০ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে এই কারচুপি করা হয়েছে৷ এই সময়, সাতটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ১৪,০০০ অ্যাকাউন্ট থেকে, আইএমপিএস ব্যবহার করে ইউকো ব্যাঙ্কের ৪১,০০০ অ্যাকাউন্টে ওই অর্থ পাঠানো হয়েছিল। ব্যাঙ্কের অভিযোগ এর জন্য মোট ৮,৫৩,০৪৯ বার লেনদেন করা হয়েছিল। মজার বিষয় হল, এই লেনদেনগুলি ইউকো ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টধারীদের খাতায় নথিভুক্ত হলেও, যে ব্যাঙ্কগুলি থেকে অর্থ পাঠানো হচ্ছিল, সেগুলির খাতায় ওই লেনদেনগুলি ‘ফেইলড’ বা ‘ব্যর্থ’ হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। অর্থাৎ, ওই ৮২০ কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টধারীদের কাছ থেকে না এলেও, ইউকো ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টধারীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। বেশ কয়েকজন অ্যাকাউন্টধারী এই পরিস্থিতিকে কাজেও লাগিয়েছেন। অবৈধভাবে আসা অর্থ তাঁরা ইতিমধ্যে তুলেও নিয়েছেন।