নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্যা হল, তারা হিসেব দেয় না। তবে, এই অভ্যাস ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। তাই কেন্দ্র থেকে কিছু কিছু সাহায্য তারা পাচ্ছে। বুধবার (৩১ জুলাই), রাজ্যসভায় এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার ভোরে, টানা বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ ধস নেমেছে কেরলে। তছনছ হয়ে গিয়েছে ওয়েনাড় জেলার একাধিক গ্রাম। সেই বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে, এদিন রাজ্যসভায় ফের কেন্দ্রীয় বাজেটে বন্যা ত্রাণের প্যাকেজ থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করার প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সাকেত গোখলে। বাজেট আলোচনার মধ্যেই কেরলে এই ঘটনা ঘটেছে। তাই, বন্যাত্রাণে থাকা রাজ্যগুলির তালিকায় কেরল ও পশ্চিমবঙ্গকে যোগ করা যায় কিনা, প্রশ্ন করেন তৃণমূল সাংসদ। এরই জবাবে, অমিত শাহ জানান, এই বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাকে বন্যা-দুর্গত রাজ্যগুলির তালিকায় না রাখা হলেও, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল – এই দশ বছরে বিপর্যয় মোকাবিলায় অনেক অর্থ সহায়তা করা হয়েছে বাংলাকে।
অমিত শাহ বলেন, “২০১৪ থেকে ২০২৪ – এই ১০ বছরে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ৬,২৪৪ কোটি টাকার দাবি আমরা মঞ্জুর করেছি। ওখান থেকে যেমন যেমন খরচের হিসেব আসে, আমরা টাকা দিয়ে দিই। এইভাবে ৪,৬১৯ কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখান থেকে হিসেব আসা নিয়ে সমস্যা আছে। আমি তো তা করতে পারি না। সেই হিসেব বাংলাকেই করতে হবে। হিসেব দিতে হয়। এটা তো সরকারের বিষয়। কোনও রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। সরকারের নিয়ম আছে, বিধি আছে, খরচের হিসেব রাখতে হয়, অডিট হয়। যদি কাউকেই না মানি, তাহলে তো কিছু সমস্যা হবেই। তবে ধীরে ধীরে অভ্যাস হচ্ছে (হিসেব দেওয়ার)। উন্নতি হয়েছে। তাই, ৬,২৪৪ কোটি টাকার মধ্যে ৪,৬১৯ কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তহবিল খরচের অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাকেত গোখলে। তিনি বলেন, এই তহবিলের ২৫ শতাংশ দেয় রাজ্য সরকার। তাও, কোনও বিপর্যয়কে কেন্দ্র জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা না করলে, সেই তহবিলের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারে রাজ্য। রাজ্যগুলিকে এই তহবিলের ২৫ শতাংশ খরচ করার অধিকার দেওয়া যায় কিনা, প্রশ্ন করেন তৃণমূল সাংসদ। অমিত শাহ অবশ্য তাঁর এই দাবি ভুল বলে দাবি করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ওই তহবিলের ১০ শতাংশ রাজ্য নিজের ইচ্ছামতো খরচ করতে পারে। কিন্তু, ওই তহবিলের অর্থ যাতে অন্য কোনও প্রকল্পে খরচ করা না হয়, তার জন্যই বাকি ৯০ শতাংশ খরচ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের গাইডলাইন মেনে চলতে বলা হয়েছে। সেই গাইডলাইন মেনে রাজ্যগুলি ওই ৯০ শতাংশও খরচ করতে পারে। তার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি লাগে না।