Delhi Services Bill: ‘ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান’, লোকসভায় বিতর্কিত দিল্লি পরিষেবা বিল পেশ কেন্দ্রের

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Aug 01, 2023 | 6:18 PM

Delhi Services Bill: বিলের বিষয়ে লোকসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দিল্লি রাজ্য সম্পর্কিত যে কোনও আইন আনতে পারে সংসদ। এই সম্পর্কিত সমস্ত আপত্তিই রাজনৈতিক।"

Delhi Services Bill: ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান, লোকসভায় বিতর্কিত দিল্লি পরিষেবা বিল পেশ কেন্দ্রের
বিলের বিষয়ে লোকসভায় আলোচনা করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
Image Credit source: PTI

Follow Us

নয়া দিল্লি: অবশেষে মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ করা হল বিতর্কিত দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল সরকার (সংশোধনী) বিল, ২০২৩। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি পেশ করেন। দিল্লি সরকারের আমলাদের নিয়োগ এবং বদলি সম্পর্কে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র যে অধ্যাদেশ জারি করেছে, সেই অধ্যাদেশকে প্রতিস্থাপন করবে এই বিলে বর্ণিত আইন। বিলের বিষয়ে লোকসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানান, সংসদকে দিল্লি সম্পর্কে যে কোনও আইন পাস করার ক্ষমতা দিয়েছে ভারতীয় সংবিধান। অমিত শাহ বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দিল্লি রাজ্য সম্পর্কিত যে কোনও আইন আনতে পারে সংসদ। এই সম্পর্কিত সমস্ত আপত্তিই রাজনৈতিক। দয়া করে আমাকে এই বিল আনার অনুমতি দিন।” প্রত্যাশিতভাবেই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি।

এই বিল আইনে পরিণত হলে, দিল্লির সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত সুপারিশে চূড়ান্ত সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা পাবেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল। ২৫ জুলাই এই বিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছিল। এর আগে গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছিল, দিল্লির প্রশাসনিক পরিষেবা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে শুধুমাত্র দিল্লির নির্বাচিত সরকারের উপর। এই আইন পাশ হলে, কার্যত সেই রায়ের কোনও মূল্য থাকবে না। এই বিল সম্পর্কে সংসদে বিজেপি নেতা পরবেশ ভার্মা বলেছেন, “দিল্লির জনগণের জন্যই দিল্লি (পরিষেবা) অধ্যাদেশ আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে যে ক্ষমতা দিচ্ছে, তা আগে কখনও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীরা পাননি। তাই এই অধ্যাদেশ নিয়ে খুশি হওয়া উচিত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর।”

এই অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর থেকেই এর তীব্র বিরোধিতা করে চলেছে অরবিন্দ কেজরীবালের আপ সরকার। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে এই অধ্যাদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে তারা। পাশাপাশি রাজ্যসভায় গত কয়েক মাসে, দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল সরকার (সংশোধনী) বিল, ২০২৩ পাস হওয়া আটকাতে সারা দেশে সফর করেছেন কেজরীবাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উদধব ঠাকরে-সহ একের পর এক বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করে, বিলটির বিরুদ্ধে সমর্থন জোগাড় করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টার ফল এদিন লোকসভায় দেখা গিয়েছে। কংগ্রেস-সহ প্রায় সকল বিরোধী দলই এই বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। এমনকী, ২৬ দলের বিরোধী জোট, ‘ইন্ডিয়া’র সদস্য না হয়েও, কেসিআর-এর বিআরএস-ও এই বিলের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিন লোকসভায়, কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বিলটির বিরোধিতা করে বলেছেন, “আমি বিলটি প্রবর্তনের বিরোধিতা করছি। বিভিন্ন রাজ্যের এক্রিয়ারকে এই সরকারের কীভাবে লঙ্ঘন করে, তার প্রমাণ এই বিল। সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কবর খননের জন্য এই বিলের মকশা করা হয়েছে।” এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য দলের রাজ্যসভার সাংসদদের কাছে তিন লাইনের হুইপ জারি করেছে জনতা দল (ইউনাইটেড)। এমনকী, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নায়ারণ সিং-এর জন্য এই প্রথম দলীয় হুইপ জারি করা হয়েছে। জেডি(ইউ) দলের রাজ্যসভার চিফ হুইপ অনিল প্রসাদ হেগড়ে জানিয়েছেন, হরিবংশ নায়ারণ সিং-সহ সমস্ত সাংসদের জন্য়ই এই হুইপ জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর বিজেপির সঙ্গে জেডি (ইউ)-এর ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরও রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদেই থেকে গিয়েছিলেন হরিবংশ। তারপর থেকে একের পর এক ইস্যুতে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন তিনি। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি জেডি (ইউ)। তাঁকে হুইপ জারি করার ঘটনায় অনেকেরই মনে পড়ে গিয়েছে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথা। ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার সময় লোকসভার তৎকালীন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্য়ায়কে ইস্তফা দিতে বলেছিল সিপিআইএম। কিন্তু, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় সেই নির্দেশ অমান্য করেছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, লোকসভার অধ্যক্ষ একটি সাংবিধানিক পদ। তাঁর নির্দল মনোভাব নিয়ে থাকা উচিত। পরে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল সিপিআইএম।

এই বিলের উপর আলোচনার সময়, দলের সমস্ত রাজ্যসভা সাংসদদের সংসদে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে কেসিআর-এর ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস-ও। এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য হুইপ জারি করেছে তারা। রাজ্যসভায় বিআরএস-এর সাতজন সাংসদ রয়েছেন। বস্তুত, লোকসভায় বিজেপি তথা এনডিএ-র যা শক্তি, তাতে কোনওভাবেই বিলটি পাস হওয়া আটকানো সম্ভব নয় বিরোধীদের। তবে, সেই সুযোগ রয়েছে রাজ্যসভায়। রাজ্যসভায় এখনও সংখ্যায় বিরোধীদের থেকে পিছিয়ে আছে এনডিএ। বিআরএস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, বা বিজেডির মতো দলগুলি, যারা এনডিএ বা ইন্ডিয়া – কোনও জোটে নেই, তাদের ভোট এই ক্ষেত্রে অত্যন্তু গুরুত্বপূর্ণ। বিআরএস খোলাখুলি বিলের বিরোধিতার কথা জানালেও, এই বিষয়ে বাকি দলগুলির অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।

Next Article