নয়া দিল্লি: কলকাতার কাশীপুরের বিজেপি নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরকালে আরও একবার রাজনৈতিক খুনের অভিযোগে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। শুধু তাই নয় তাৎপর্যপূর্ণভাবে, দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর থেকে অজুর্ন চৌরাসিয়ার মৃত্যু নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তথা রাজ্যেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। বৃহস্পতিবারই দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। গতকালই উত্তরবঙ্গের জনসভা থেকে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) তীব্র আক্রমণ করেন অমিত। রাজ্য বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা তুলে সরব হয়েছিল, উত্তরবঙ্গের সেই সভা থেকেই কার্যত তাদের দাবিতেই সিলমোহর দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আজই উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফিরে আসার কথা ছিল অমিতের।
কিন্তু অমিতের ফিরে আসার আগেই কাশীপুরের বিজেপি নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার (Arjun Chaurasia Case) অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে, শুক্রবার সকাল থেকে রাজনৈতিক পারদ উর্ধ্বমুখী। রেলের পরিত্যক্ত আবাসন থেকে বিজেপি নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। এমনকী খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও মৃত বিজেপি নেতার বাড়িতে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই মৃত্যুকে হাতিয়ার করেই দিল্লি থেকে সুর চড়াল বিজেপি। বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
অমিতের বাংলা সফরকালে বিজেপি নেতার মৃত্যু নিঃসন্দেহে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল, সেই কারণে তৎপরতার সঙ্গে দিল্লি বিজেপি সাংবাদিক বৈঠক করে মমতাকে আক্রমণ করেছেন। গৌরব ভাটিয়া বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অহংকার বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণ সরকারে আনতে যেমন জানে, তেমনই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি মমতার সরকার থেকে বাংলাকে উৎখাত করবে। তৃণমূলের দুর্নীতি, তুষ্টিকরণের রাজনীতির বিরোধিতা করার জন্য আমাদের দলের ২৭ বছর বয়সী কর্মঠ যুবনেতা অর্জুন চৌরাসিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। সবথেকে দুঃখের বিষয় বাংলার পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে, সেই কারণে দ্রুত পোস্টমর্টেম করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে। মমতা বাংলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে, কবে তিনি নিজের মৌনতা ভঙ্গ করবেন? আমাদের যে যুবনেতা মারা গিয়েছে, সে বাংলার নাগরিকও, সরকারের কী কোনও দায়িত্ব নেই?”
গৌরব ভাটিয়া বিজেপি নেতার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন, এবং মৃতের পরিবারকে সুবিচার দেওয়ার কথা বলেছেন। বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন বিজেপি মুখপাত্র। একের পর এক রাজনৈতিক খুন থেকে শুরু করে ধর্ষণের ঘটনায় বিরোধীদের একাংশে থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি উঠেছে। অর্জুনের মৃত্যুর ঘটনায় বিরোধীদের সুর আরও চড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। অমিত শাহ নিহত অর্জুনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কী বলেন, সেটাই এখন দেখার।