নয়া দিল্লি : ক্ষুধার সূচকের সাম্প্রতিক রিপোর্টে পিছিয়ে পড়ে ভারত। ১১৬ টি দেশের মধ্যে ২০২১ সালে ক্ষুধার সূচকে ভারতের স্থান ১০১। ভারতের এই পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। এবার সেই বিষয়েই মুখ খুলল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই রিপোর্টে সমস্যা আছে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। আজ শুক্রবার রাজ্যসভায় লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি জানান, ভারতের আসল ছবি ওই সূচকে ধরা পড়েনি।
কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী উল্লেখ সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি উল্লেখ করেছেন, নেপাল ও বাংলাদেশের অবস্থান যথাক্রমে ৭৬ ও ৯২ তে। আর ভারতের অবস্থান ১০১-এ। তবে মন্ত্রীর দাবি, ওই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট যে, ভারতে পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হয়েছে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের ভারতের স্কোর ২০০০ সালে ছিল ৩৮.৮। সেখান থেকে পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় স্কোর কমে হয়েছে ২৭.৫। অর্থাৎ ক্ষুধা মেটাতে অনেকটাই সক্ষম হয়েছে ভারত।
ক্ষুধার আসল ছবি ওই গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের রিপোর্টে নেই বলেই দাবি মন্ত্রীর। তিনি জানান, অনেক গুলি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়। তিনি জানান, রিপোর্টে যে শিশু মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে, তার কারণ যে ক্ষুধা বা অপুষ্টি, তেমন প্রমাণ কোথাও দেওয়া নেই। পাশাপাশি খাদ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী জানান, ওই আইন অনুযায়ী, গ্রামাঞ্চলের ৭৫ শতাংশ মানুষের ক্ষুধা মেটানোর ব্যবস্থা হয়েছে।
গতবছর বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার সূচকে ভারতের স্থান ছিল ৯৪। চলতি বছরে তা আরও কয়েক ধাপ পিছিয়ে ১০১ -এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকী প্রতিবেশী তিন দেশ – পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালের থেকেও পিছনে রয়েছে ভারত। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে সবথেকে শীর্ষে রয়েছে চিন, ব্রাজ়িল এবং কুয়েত সহ মোট আঠারোটি দেশ। এই প্রতিটি দেশের ক্ষুধা সূচকের পয়েন্ট পাঁচের কম রয়েছে।
এক আইরিশ ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইউ এবং এক জার্মান সংস্থা ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে যৌথভাবে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে। দুই সংস্থাই ভারতে বর্তমানে খিদের যে জ্বালা রয়েছে, তা উদ্বেগজনক বলে মনে করছে। ২০২০ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক তৈরি হয়েছিল ১০৭ টি দেশকে নিয়ে। তার মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ৯৪ তম। আর চলতি বছরে মোট ১১৬ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০১ তম। অর্থাৎ, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে গত বছরের তুলনায়।
প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যান যোজনার কথাও উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ওই স্কিমে প্রত্যেককে প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য দেওয়া হচ্ছে। সেই যোজনা আরও চার মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন : Indian Railways: আপদ ওমিক্রন! সংক্রমণ রুখতে তত্পর ভারতীয় রেল, জারি নতুন নির্দেশিকা