নয়া দিল্লি: ২০১৯ সালে কেন্দ্রের তরফে রাজধানী দিল্লির রাজপথ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেন্ট্রাল ভিস্তা (Central Vista Project) নামক এই প্রকল্পের অধীনে কর্তব্য পথ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাসভবন, সংসদ ভবনের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিংকে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়। নতুন সংসদ ভবনও এই সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের অধীনেই তৈরি হয়েছে। এই সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প নিয়ে বিরোধীদের একাধিক প্রশ্ন ছিল। কেন্দ্রের তরফে সেই সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে।
সেন্ট্রাল ভিস্তা মাস্টার প্ল্য়ান করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ছয় বছর ধরে একাধিক প্রকল্পে কাজ করা হবে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের অধীনে। ২০২৬ সালের মধ্যে নতুন সংসদ ভবন ও আরও ১০টি বিল্ডিং, যার মধ্যে কমন সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট, সেন্ট্রাল কনফারেন্স সেন্টার, ন্য়াশনাল আর্কাইভ থাকবে। এই সবকটি বিল্ডিং তৈরি করার জন্য আনুমানিক ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এখনও অবধি নতুন সংসদ ভবন তৈরি করতে ৮৬২ কোটি ও সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্য়াভিনিউয়ের জন্য ৪৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২১-২২ সালে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের জন্য মোট ৭৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, করোনাকালে জনস্বাস্থ্য ও করোনার চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ অর্থ সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার জনস্বাস্থ্য়কে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। সেই কারণে ২০২০-২১ সালে সরকার স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ১৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৯৪ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। শুধুমাত্র করোনা টিকাকরণের জন্য, ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
পাশাপাশি করোনাকালে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে কাজ থামানোর অর্থ ছিল সরকারের উপরে বাকি থাকা প্রকল্পের চাপ বাড়ত এবং কর্মীদের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হত। প্রকল্পে যত দেরী হবে, ততই মূল্য়বৃদ্ধির জেরে খরচও বৃদ্ধি হবে, এই কথা মাথায় রেখেই করোনাকালেও জারি রাখা হয়েছিল।
অনেকরই প্রশ্ন ছিল, পুরনো সংসদ ভবনের সংস্কার না করে, কেন নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হল এত টাকা খরচ করে? এর জবাবে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ১৯২৭ সালে পুরনো সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালের পর লোকসভার আসন সংখ্য়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ২০২৬ সালে লোকসভার সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর একটা সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় সব সদস্যদের সংসদে বসার জায়গা করে দেওয়ার জন্য বৃহত্তর জায়গার প্রয়োজন পড়বে, যা এই বর্তমান সংসদ ভবনে সম্ভব নয়। সেই কারণেই নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছে।
পরিবেশের স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় রাখা সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের অন্যতম ভিত্তি ছিল। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে কোনও গাছ কাটা হবে না। যে সমস্ত গাছ উচ্ছেদ করা হবে, তা এনটিপিসি ইকো পার্কে স্থানান্তরিত করা হবে।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের জন্য ইন্ডিয়া গেট, সংসদ, নর্থ ও সাউথ ব্লক, ন্যাশনাল আর্কাইভ বা অন্য় কোনও হেরিটেজ বিল্ডিং ভেঙে ফেলা হবে না।