নয়া দিল্লি : পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল করে বাংলা করার ইচ্ছার কথা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিষয়টি দিল্লিতে গিয়ে অনেকদিন ধরেই আটকে ছিল বলে অভিযোগ। তবে এদিন সংসদের বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল করে বাংলা করার প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে এসেছে। এমনকী তিনি এও জানিয়েছেন বিগত পাঁচ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন শহরের নাম বদলের জন্য যে প্রস্তাবগুলি এসেছে, সেগুলিতে সম্মতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন সংসদে জানিয়েছেন, “বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি – তিন ভাষাতেই রাজ্যের নাম বদল করে যাতে বাংলা করা হয়, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে একটি প্রস্তাব এসেছে কেন্দ্রে কাছে।” উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বিভিন্ন শহরগুলির নাম বদল করার জন্য যে প্রস্তাবগুলি পাঠানো হয়েছে, তার একটি বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সাঈদা আহমেদ। এই সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে হেরিটেজ শহরগুলির নাম বদলের ক্ষেত্রে কোনও গাইডলাইনে পরিবর্তন করা হয়েছে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
জবাবে নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এমন কোনও গাইডলাইন নেই হেরিটেজ শহরের নাম বদলের জন্য। ২০১৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রীর নাম বদল করে করা হয়েছে রাজামহেন্দ্রবরম। ২০১৮ সালে ঝাড়খণ্ডের নগর উন্তরির নাম বদল করে করা হয়েছে শ্রী বনশ্রীধন নগর। ওই একই বছরে মধ্যপ্রদেশ নগর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বীরসিংহপুর পলির নাম বদলে করা হয়েছে মা বীরাসিনী ধাম এবং উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের নাম বদল করে করা হয়েছে প্রয়াগরাজ।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে বাংলা করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই আটকে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নাম বদল করার কথা বলার পরপরই ২০১৬ সালে রাজ্য বিধানসভায় এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। সেই মতো পশ্চিমবঙ্গের নতুন নামকরণের প্রস্তাব হিসেবে বাংলায় – বাংলা, ইংরেজিতে – বেঙ্গল এবং হিন্দিতে – বঙ্গাল উল্লেখ করা হয়। বিধানসভায় এই বিল নিজেদের পক্ষে আনার জন্য কোনও বেগ পেতে হয়নি রাজ্য সরকারকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যকে জানানো হয়, তিনটি নামের বদলে পরিবর্তিত ক্ষেত্রে একটিই নাম রাখার জন্য। এরপর ২০১৮ সালে রাজ্য বিধানসভায় আবারও এই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়। তাতে তিন ভাষাতেই রাজ্যের নতুন নাম ‘বাংলা’ করার পক্ষে বিল পাশ করানো হয়।