নয়া দিল্লি: রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় (Rajiv Gandhi Assassination Case) সম্প্রতি ছয় দোষীদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)। এবার শীর্ষ আদালতের সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র (Centre)। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকাণ্ড মামলায় সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে ‘আইনগতভাবে ত্রুটি’ রয়েছে। তাই এই ছয়জনের মুক্তির বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ১১ নভেম্বর রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত নলিনী শ্রীহরণ, সন্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস, জয়াকুমার ও রবীচন্দ্রনকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। গান্ধী পরিবার প্রথম থেকেই এই তাঁদের মুক্তির পক্ষে সওয়াল করলেও কংগ্রেসের এই বিষয়ে ভিন্ন মত ছিল। সনিয়া গান্ধী আগে এই মামলায় দোষীদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে কেন্দ্রও প্রথম থেকেই দোষীদের ছেড়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ছিল। কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারাও সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর বলেছিলেন, এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতায় আঘাত আসবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গেই অবস্থান বলে জানিয়েছিলেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। এবার কেন্দ্রের তরফে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হল। কেন্দ্র জানিয়েছে, এই মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার সময় যথাযথ শুনানি হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর কাছে পেরুম্বুদুরে এক নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সেই জনসভায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় মৃত্য়ু হয় তাঁর। বিস্ফোরণের দায় ওঠে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ঈলাম (LTTE)-র দিকে। দোষী সাব্যস্তদের প্রথমে মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তামিলনাড়ু সরকারের আবেদনে তাদের সাজা মকুব করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সম্প্রতি সেই সাজাও মকুব করে দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। সুপ্রিম কোর্ট ছয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামীকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিয়ে জানিয়েছিল, কারাগারে আসামীদের আচরণ “সন্তোষজনক” ছিল। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা জেল খেটেছে। এদিকে তার ৬ মাস আগেই ১৮ মে শীর্ষ আদালত রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত পেরারিভালানের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। সংবিধানের ১৪২ নম্বর ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই একই ধারার অধীনে এই ৬ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম নির্দেশের পরের দিনই এই দোষীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।