Marital rape: বৈবাহিক সম্পর্কে কেন ধর্ষণ টানছেন? ‘সম্মতি’র গুরুত্ব মেনেও বিরোধিতা কেন্দ্রর
Marital rape: বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার বিরোধিতা করল মোদী সরকার। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি প্রাথমিক হলফনামা দাখিল করেছে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়েছে, যৌন হিংসা থেকে যে বিবাহিত মহিলাদের রক্ষা করার জন্য ভারতের আইনে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। বিবাহের মতো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে "ধর্ষণ"-এর মতো অপরাধকে টেনে আনাটা 'অত্যধিক কঠোর' এবং 'অসামঞ্জস্যপূর্ণ' পদক্ষেপ হবে।
নয়া দিল্লি: বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার বিরোধিতা করল মোদী সরকার। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি প্রাথমিক হলফনামা দাখিল করেছে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়েছে, যৌন হিংসা থেকে যে বিবাহিত মহিলাদের রক্ষা করার জন্য ভারতের আইনে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। বিবাহের মতো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে “ধর্ষণ”-এর মতো অপরাধকে টেনে আনাটা ‘অত্যধিক কঠোর’ এবং ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ পদক্ষেপ হবে। কেন্দ্র আরও বলেছে, ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রম ২, ৩৭৬-এর খ এর ধারা এবং ফৌজদারি বিধির ১৯৮-এর খ ধারার সাংবিধানিকতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে, সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে যথাযথ আলোচনা করে একটি সামগ্রিক পদ্ধতির গ্রহণ করা প্রয়োজন। কেন্দ্রর মতে, এই বিষয়টি যতটা না ‘আইনি’, তার থেকে বেশি ‘সামাজিক’। বিবাহের পরও যৌনতার ক্ষেত্রে মহিলাদের সম্মতি লাগে, এটা মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সরকারের মতে, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে সম্মতি লঙ্ঘনের পরিণতিগুলি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্মতি লঙ্ঘনের থেকে আলাদা হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারায় (বর্তমানে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ নম্বর ধারা), ধর্ষণের অপরাধ থেকে অ-সম্মতিমূলক বৈবাহিক যৌনতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটিই এই ধারার ব্যতিক্রম নম্বর ২। এই ব্যতিক্রমের সাংবিধানিক বৈধতার পাশাপাশি হিন্দু বিবাহ আইনের ৯ নম্বর ধারাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালতে জমা দেওয়া প্রাথমিক হলফনামায় কেন্দ্র জাতীয় মহিলা কমিশনের ২০২২-এর এক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ৩৭৫ নম্বর ধারার ওই ব্যতিক্রম বজায় রাখা উচিত। প্রথমত, একজন বিবাহিত মহিলার সঙ্গে, একজন অবিবাহিত মহিলার মতো আচরণ করা যায় না। দ্বিতীয়ত, এর বিকল্প প্রতিকার রয়েছে। তৃতীয়ত, অনেক ক্ষেত্রেই স্ত্রীরা স্বামীর উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হন। তাই, স্বামীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে, ওই স্ত্রী এবং তাঁর সন্তানরা আর্থিক কষ্টে পড়তে পারে।
বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আবেদনে বলা হয়, সমস্ত ধরণের যৌন হিংসা বা সম্মতির লঙ্ঘনকারীদের সঙ্গে সমান আচরণ করা উচিত। বিবাহিত বলে ছাড় দেওয়া চলবে না। এই আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্র বলেছে, বৈবাহিক প্রতিষ্ঠানে, স্বামী/স্ত্রীরা সবসময় একে অপরের কাছ থেকে যৌনতা প্রত্যাশা করে থাকে। এই বাধ্যবাধকতা, প্রত্যাশা কোনও অপরিচিত ব্যক্তির যৌন-কামনার মধ্যে থাকে না। এমনকি অন্য কোনও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও থাকে না। তাই বৈবাহিক ক্ষেত্রে এবং তার বাইরে, অ-সম্মতিমূলক যৌনতার মধ্যে গুণগত পার্থক্য রয়েছে। কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, আইনসভাও মনে করে, বৈবাহিক প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে এই ব্যতিক্রম বজায় রাখা উচিত। তাই এই ব্যতিক্রম তুলে দেওয়া আদালতের জন্য এটি উপযুক্ত হবে না। কেন্দ্র মেনে নিয়েছে, কোনও পুরুষের তাঁর স্ত্রীর সম্মতি লঙ্ঘন করার মৌলিক অধিকার নেই। তবে তার জন্য ধর্ষণের অপরাধ চাপানো, কেন্দ্রর মতে, খুব কঠোর এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ।