জয়পুর : আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচন। মোট ১৫ রাজ্যের ৫৭ টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের নির্ঘণ্টও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। উচ্চকক্ষের সাংসদ বেছে নেওয়ার নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে ১০ জুন। এর মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী নির্বাচনে নিজেদের চমক দেখাচ্ছেন। সেরকমই চমক দেখা গেল এবার রাজস্থানে। রাজস্থান থেকে বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন সুভাষ চন্দ্র। রাজস্থানে রাজ্য়সভা নির্বাচনের জন্য পঞ্চম প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এই এসেল গ্রুপের চেয়ারপার্সন।
প্রসঙ্গত, রাজস্থানে মোট ৪ টি রাজ্যসভা আসন রয়েছে। সেখানে ক্ষমতাসীন সরকার অর্থাৎ, কংগ্রেস দুটি আসনে নিশ্চিতভাবে জিতবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর একটি আসনে বিজেপির জয় প্রায় নিশ্চিত। চতুর্থ আসনের জন্য বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ও কংগ্রেসের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে চলেছে। কংগ্রেসের প্রমোদ তিওয়ারির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সুভাষ চন্দ্র। তবে সুভাষ চন্দ্রকে বাইরে থেকে সমর্থন করে রাজ্যসভায় পাঠানোর পিছনে বিজেপির সুনিপুণ রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে। প্রসঙ্গত, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে এই রাজ্যে। বর্তমানে শাসকদল কংগ্রেস হলেও সেখানে কংগ্রেসের অন্দর্দ্বন্দ্ব রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও সচিন পাইলটের মধ্যেকার অবস্থা অনেকটা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির মতো। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে আগেও। গুজরাটের ক্ষেত্রেও সেই ছবি দেখা যাচ্ছে। বিজেপি কংগ্রেসের এই দুর্বল জায়গারই সুযোগ নিয়ে নিজেদের রণনীতি সাজাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজ্যসভা নির্বাচনের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের তিনজন প্রার্থীই জিতবেন। বিজেপি সুভাষ চন্দ্রকে দাঁড় করিয়েছে। তারা জানে তাদের কাছে যথেষ্ট ভোট নেই। আর কিই বা করবে তারা। তারা ঘোড়া কেনাবেচা করবে এবং রাজ্যের পরিস্থিতি খারাপ করে তুলবে।’ কংগ্রেসের তরফে রণদীপ সুরজেওয়ালা, মুকুল ওয়াসনিক ও প্রমোদ তিওয়ারিকে প্রার্থী করা হয়েছে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য। এদিকে রাজ্যসভায় বিজেপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বসুন্ধরা রাজের ক্যাবিনেটের প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনশ্যাম তিওয়ারি। ২০০ সদস্যেক রাজস্থান বিধানসভায় প্রত্যেক প্রার্থীকে ৪১ টি ভোট পেতে হবে জেতার জন্য। রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেসের রয়েছে ১০৮ জন বিধায়ক। বিজেপির রয়েছে ৭১ জন বিধায়ক। অতএব তাদের প্রার্থীকে জেতানোর পরও বিজেপির কাছে অতিরিক্ত ৩০ টি ভোট থেকে যাবে। দ্বিতীয় একটি আসন পেতে তাদের লাগবে আরও ১১ টি ভোট। সেখানে তৃতীয় আসনটি জিততে কংগ্রেসের লাগবে ১৫ টি ভোট। এক্ষেত্রে ছোটো ছোটো রাজনৈতিক দল ও নির্দল বিধায়করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে রাজ্যসভার প্রতিনিধি নির্বাচনে। রাজস্থান বিধানসভায় ১৩ জন নির্দল বিধায়ক, দু’জন রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি (RLP) বিধায়ক, দু’জন সিপিএম বিধায়ক রয়েছে। এবারের রাজ্য়সভা নির্বাচনে তুরুপের তাস হতে চলেছেন। বিজেপি যেখানে নির্দল বিধায়কদের দিকে তাঁকিয়ে আছে অপেক্ষাকৃত ছোটো দল ও বাম বিধায়কদের সাহায্য়প্রার্থী কংগ্রেস।