চণ্ডীগঢ়: ভাইরাল ছাত্রীদের স্নানের ভিডিয়ো। তাও আবার একজন নয়, ৬০ জন পড়ুয়ার। চণ্ডীগঢ় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় উত্তপ্ত গোটা দেশ। বিক্ষোভের আগুনে ফুটছে ছাত্রছাত্রীরা। এরই মাঝে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের তরফে দাবি করা হল এখনও পর্যন্ত ফাঁস হওয়া একটি ভিডিয়োই পাওয়া গিয়েছে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়োটি অভিযুক্ত ছাত্রীর, যার বিরুদ্ধে বাকি পড়ুয়াদের স্নানের ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ। অন্য কোনও ভিডিয়ো এখনও মেলেনি বলেই দাবি পুলিশের। অভিযুক্তের মোবাইলের সমস্ত ছবি ও ভিডিয়ো ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চণ্ডীগঢ় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। গতকালই পুলিশ মূল অভিযুক্ত যাত্রী সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে বিক্ষোভে এখনও অনড় পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করায়, তাদের ক্ষমা চাইতে হবে বলেই দাবি বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে ছাত্র-ছাত্রীদের শান্ত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলেই জানিয়েছেন আপ সরকারের মন্ত্রীরা।
শুধু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নয়, পুলিশের উপরও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পড়ুয়ারা। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট আটকে রাতভর বিক্ষোভ দেখানোর পর পরিস্থিতি সামাল দিতে আসে পুলিশ। কিন্তু তার আগে অভিযোগ জানানো হলেও, পুলিশ তখন আসেনি।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, চণ্ডীগঢ় বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস হস্টেলে দল বেঁধে স্নান করছিলেন ছাত্রীরা। গোপনে এক ছাত্রী সেই স্নানের ভিডিয়ো রেকর্ড করে নেয়। তারপর সেই ভিডিয়ো সিমলায় তাঁর বন্ধুর কাছে পাঠিয়ে দেন অভিযুক্ত ছাত্রী। ওই তরুণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেয় ভিডিয়োটি।
দিন কয়েক বাদে ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেউ শোরগোল পড়ে যায়। নিজেদের স্নানের ছবি ও ভিডিয়ো এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে দেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ছাত্রীরা। আটজন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুলকালাম শুরু হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় ওঠে। বিতর্কে ঘি ঢালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আচরণ। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ঘটনার দায় নিতে রাজি হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উল্টে তারা বিষয়টি ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। এরপরই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ফেটে পড়েন তাঁরা। শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শুরু হয় ধর্না। ক্যাম্পাস ঘেরাও করে ‘উই ফর জাস্টিস’ স্লোগান দেয় পড়ুয়ারা। বিক্ষোভ সামাল দিতে আসরে নামে পুলিশ। শনিবার রাতে ক্যাম্পাস চত্বরে পড়ুয়াদের উপরে লাঠিচার্জও করে পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখেই ময়দানে নামে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তভার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। তাতে অবশ্য বিক্ষোভ থামেনি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে প্রতিবাদ পৌঁছয় মোহালির রাস্তাতেও। গোটা ঘটনায় নড়চড়ে বসেছে মহিলা কমিশনও। ঘটনা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপের কথা বলছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন।