চণ্ডীগঢ় : শেষ পর্যন্ত নভজ্যোৎ সিং সিধুর দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি। পঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে এপিএস দেওলের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে কি পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধু এবং মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল, তা মিলে গেল? কোনও কি সন্ধি হয়েছে দুই নেতার মধ্যে? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে।
আজ সিধুকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বসেন চরণজিৎ সিং চন্নি। বলেন,”পঞ্জাবের মন্ত্রিসভা অ্যাডভোকেট জেনারেল এপিএস দেওলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে।” অথচ ছবিটা দুদিন আগেও এরকম একেবারেই ছিল না। দুদিন আগে পর্যন্তও মনে করা হচ্ছিল, এপিএস দেওলের পাশে দাড়াবেন চরণজিৎ সিং চন্নি। বলেছিলেন, দেওলের অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতার উপর তাঁর বিশ্বাস রয়েছে।
এদিকে পঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে নিজের পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহারের সময়েই নভজ্যোৎ সিং সিধু শর্ত দিয়েছিলেন। যদি নয়া ডিজিপি ও অ্যাডভোকেট জেনারেল দেওলকে রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, একমাত্র তবেই তিনি আবার কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবেন। আর তার পরই এপিএস দেওল আক্রমণ শানান সিধুকে।
বেশ কিছুদিন ধরেই অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে দেওলের পদত্যাগ চাইছিলেন সিধু। তাঁর দাবি ছিল, ২০১৫ সালে পঞ্জাবে পুলিশে গুলি চালনার ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মীর হয়ে কোর্টে সওয়াল করেছিলেন দেওল। অবশ্য সিধু পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেওয়ার সময় দেওলকে সরানোর শর্ত রাখলে তিনি পাল্টা বলেন, নিজের দলীয় সহকর্মীদের থেকে রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে থাকার জন্যই সিধু ভুল তথ্য পরিবেশন করছেন। এছাড়াও দেওলের অভিযোগ সরকার ও অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাজে বাধা দিচ্ছেন সিধু।
শুক্রবার সিধু বলেছিলেন ” কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সৈনিক হিসেবে পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করছি। তবে, যেদিন নতুন ডিজি ও অ্যাডভোকেট জেনারেলের নাম ঘোষণা হবে সেদিনই দায়িত্বভার গ্রহণ করব। সত্যের রাস্তায় হাঁটলে, পদ দিয়ে কিছু যায় আসে না।”
উল্লেখ্য, অমরিন্দর সিং মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পর অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন অতুল নাড্ডা। আর তারপর চরণজিৎ সিং চন্নি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এপিএস দেওলকে তাঁর সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল করেন।
এদিকে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে পঞ্জাবে। তার আগে সিধুর দাবি মেনে চন্নি তাঁর ‘প্রিয় পাত্র’কে সরিয়ে দিতে বাধ্য হলেন অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে। আগামী দিনে কি এর থেকে ফের নতুন করে কোনও জলঘোলা হতে পারে পঞ্জাব কংগ্রেসে? নাকি এ কোনও নতুন বন্ধুত্বের সমীকরণ? উত্তর মিলবে যথা সময়ে।