রায়পুর: ঘরের পিছনের জমিতে খেলাধুলো নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিল মা-বাবা, কিন্তু সে কথায় কান দেয়নি ১১ বছরের কিশোর। গত ১০ জুন বন্ধুদের সঙ্গে ওই ফাঁকা জমিতে ছোটাছুটি করে খেলতে গিয়েই আচমকা পা পিছলে ৮০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে যায় রাহুল সাহু। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন ওই কিশোরকে। পরে খবর দেওয়া হয় প্রশাসনে। জেসিবি মেশিন দিয়ে মাটি কেটে উদ্ধার করার চেষ্টা হয়, কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এভাবেই কেটে যায় দুই দিন। তৃতীয় দিনে গুজরাট থেকে বিশেষ রোবট আনানো হয় উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য। অবশেষে চতুর্থ দিনে, ১০৪ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর ছত্তীসগঢ়ের ওই পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হল কিশোরকে।
মঙ্গলবারই ছত্তীসগঢ় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জঞ্জীর-চম্পা জেলায় ১১ বছরের ওই মূক ও বধির কিশোরকে ৮০ ফুট গভীর কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘক্ষণ ওই গভীর কুয়োর মধ্যে আটকে থাকায় শ্বাসকষ্ট সহ একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা গিয়েছে ওই কিশোরের। বর্তমানে রাজ্যেরই একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে।
हमारा बच्चा बहुत बहादुर है।
उसके साथ गढ्ढे में 104 घंटे तक एक सांप और मेढक उसके साथी थे।
आज पूरा छत्तीसगढ़ उत्सव मना रहा है, जल्द अस्पताल से पूरी तरह ठीक होकर लौटे, हम सब कामना करते हैं।
इस ऑपरेशन में शामिल सभी टीम को पुनः बधाई एवं धन्यवाद। pic.twitter.com/JejmhL7PBj
— Bhupesh Baghel (@bhupeshbaghel) June 14, 2022
এদিকে, ১০৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর ওই কিশোরের উদ্ধার হওয়ার খবরে স্বস্তি পেয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলও। তিনি জানান, গোটা উদ্ধারকাজের উপরই তিনি নিয়মিত নজরদারি করছিলেন। সুরক্ষিতভাবে তাঁর উদ্ধারের খবর পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন তিনি। টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আমাদের বাচ্চা খুব সাহসী। বিগত ১০৪ ঘণ্টা ধরে ওই গর্তে ওর (উদ্ধার হওয়া কিশোর) সঙ্গে ছিল একটা সাপ ও ব্যাঙ। আজ গোটা ছত্তীসগঢ় উৎসব পালন করছে। হাসপাতাল থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক, এই কামনাই করি। এই উদ্ধারকাজে শামিল সমস্ত দলকেই অশেষ ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।”
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ওই কিশোর বিলাসপুরের অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যাবে বলেই জানানো হয়েছে হাসপাতালের তরফে। অন্য়দিকে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এই উদ্ধারকাজ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। সমস্ত উদ্ধারকারী দলের মিলিত সহযোগিতার কারণেই রাহুলকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেবাবাহিনীর প্রায় ২৫ জন সদস্য দিনরাত ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে আগেই কুয়োর ভিতরে অক্সিজেন পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল পাইপের মাধ্যমে। বিগত চারদিন ওই পাইপের সাহায্যেই শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রেখেছিল ১১ বছরের রাহুল।