রায়পুর: শুক্রবার (২ ডিসেম্বর), কয়লা শুল্ক কেলেঙ্কারি মামলায় ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের দফতরের সহ সচিব সৌম্যা চৌরাসিয়াকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এক অবৈধ খনি মামলায় জড়িত সন্দেহে তাঁর উপর দীর্ঘ দিন ধরেই নজর ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল আয়কর বিভাগ। তাঁর বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করা হয়। তারপর তল্লাশি চালায় ইডিও। গত কয়েক মাসে তাঁকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এদিনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই ডাকা হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কার্যালয়ে। জেরার পরই তাঁকে তহবিল তছরু প্রতিরোধ আইনের ধারায় গ্রেফতার করা হয়। এর আগে সৌম্যা চৌরাসিয়ার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের পদক্ষেপকে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
রাজ্যের অন্যতম শক্তিশালী আমলা হিসেবে পরিচিত সৌম্যা চৌরাসিয়া। প্রকৃতপক্ষে, গত কয়েক বছরে ধাপে ধাপে রাজ্য প্রশাসনে উপসচিব সৌম্যা চৌরাসিয়ার প্রভাব ক্রমে বেড়েছিল। প্রশাসনিক মহলে তিনি পরিচিতি ছিলেন ‘সুপার সিএম’ নামে। বিভাগীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিটি সিদ্ধান্তেই তাঁর প্রভাবশালী ভূমিকা ছিল। ভূপেন্দ্র পারমার নামে এক আরটিআই কর্মী ফেসবুকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিলেন। গত বছর নববর্ষের সময়, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন ও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর দায়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। অনেক কষ্টে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। এদিন তাঁকে গ্রেফতারের পর, তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত ইডি হেফাজতেই আছেন তিনি।
গত অক্টোবর মাসে এই মামলায় ছত্তীসগঢ় রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। তারপর, সমীর বিষ্ণোই নামে রাজ্যের এক আইএএস অফিসার এবং আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার আগে আয়কর বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, ছত্তিশগড়ে প্রতি টন কয়লা পরিবহণ থেকে ২৫ টাকা করে অবৈধ শুল্ক নেওয়া হচ্ছে। বিশাল অঙ্কের কেলেঙ্কারির জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে। পদস্থ আমলা, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি চক্র এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। এরপরই তহবিল তছরুপের তদন্ত শুরু করেছিল ইডি।
গত সপ্তাহেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল ইডি-কে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তার এক্রিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দাবি করেছিলেন ইডি তাঁর রাজ্যে মানুষের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে। এদিন সৌম্যা চৌরাসিয়ার গ্রেফতারির পর, এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।