নয়া দিল্লি: করোনার পর এবার আতঙ্ক ছড়িয়েছে চিনা নিউমোনিয়া (China Pneumonia)। চিনের গণ্ডী ছাড়িয়ে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাবা বসিয়েছে এই অসুখ। মূলত, শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা-ই এই রোগের মূল উপসর্গ। এবার এই রোগের কারণ খুঁজতে গিয়েও মূল ‘ভিলেন’ হিসাবে উঠে আসছে সেই কোভিড-১৯ (Covid-19)।
চিনা নিউমোনিয়া এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনও তথ্য দেয়নি চিন। তবে এটি সার্স-কোভ-২-আরএসভি, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং মাইক্রোপ্লাজমা নিউমোনিয়ার মতো ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO)। যা গত তিনবছর ধরে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহারের ফলে অনেকটা কমে গিয়েছিল। বর্তমানে সেটাই আবার ফিরে আসছে। হু-র মতে, চিনা নিউমোনিয়া হল আদতে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া। দীর্ঘদিন এই রোগের সংক্রমণ ছিল না। ফলে মানুষের মধ্যে এই রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে গিয়েছে। এখন কোভিড-বিধি প্রত্যাহার করায় নতুন রূপে ফিরে আসছে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া। এছাড়া অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়া এই রোগের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের প্রভাব
কীভাবে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিউমোনিয়ার মতো সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন দিল্লি AIIMS-এর মাইক্রোবায়োলজির প্রাক্তন HOD তথা বর্তমানে NIMS-এর ডিন ও গবেষক চিকিৎসক রাম চৌধুরী। তিনি জানান, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধগুলির মধ্যে একটি হল অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক। কোভিড মহামারীর সময় মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া দমন করতে অতিরিক্ত অ্যাজিথ্রোমাইসিন খেয়েছেন কম-বেশি সকলেই। যার ফলে সম্ভবত শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি পেয়েছে। কেননা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। যার ফলে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আবার অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে অনেক ভাল ব্যাকটেরিয়াও নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও সেরকম কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে কি বিপদের ঝুঁকি রয়েছে?
NIMS-এর গবেষক ডা. রাম চৌধুরীর মতে, ভারতে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া নতুন কিছু নয়। এর আগেও ভারতে এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। এটা আবার ভারতে নতুন করে উঠে আসছে। গণপরিবহণে ও বিভিন্ন দেশে সফরের মাধ্যমে এই সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবে, এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে বলে জানান তিনি।