নয়া দিল্লি : রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে সম্প্রতি বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। এই আবহে বুধবার দিল্লিতে পা রেখেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি এদিন সন্ধেবেলা কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও জানা গিয়েছে। তবে রাজস্থানের এই সঙ্কট প্রকাশ্য়ে আসার পর তিনি কংগ্রেসের সর্বোচ্চ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। এদিকে সনিয়া-গেহলটের সাক্ষাতের আগেই এক অশোক অনুগামী জানিয়েছেন, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না অশোক গেহলট। কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে অশোকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে জল্পনায় আরও ঘি ঢালল তাঁর এই মন্তব্য।
গেহলটের ঘনিষ্ঠ অনুগামী তথা রাজ্যের মন্ত্রী প্রতাপ সিং কাচারিয়াসই প্রথম ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে অশোক গেহলট সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে পারেন। এদিন সেই কাচারিয়াসই বলেছেন, ‘কংগ্রেস অশোক গেহলটের নেতৃত্বেই কাজ করবে। আমরা তাঁর ইস্তফার বিষয়ে কোনও আলোচনা করিনি। তিনি আজ ইস্তফা দিচ্ছেন না, তিনি ভবিষ্যতেও ইস্তফা দেবেন না।’ আরেক মন্ত্রী বিশ্বেন্দ্র সিং বলেছেন, ‘গেহলট রাজস্থানে তাঁর ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ করবেন।’ রাজস্থানের এই দুই মন্ত্রীর মন্তব্যে ফের জল্পনার সূত্রপাত হয়েছে।
উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি’গ্রহণ করা হয়েছিল। আর এদিকে সভাপতি নির্বাচনে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে রাজি হন না। পরে রাহুল গান্ধী স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, গেহলট সভাপতি নির্বাচিত হলে গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও সেখানে আরেক বিরোধ শুরু হয়। রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন। কংগ্রেস হাই কম্যান্ডের তরফে সচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করার একটি ইঙ্গিত দেওয়া হয়। তারপর বেঁকে বসেন গেহলট অনুগামী বিধায়ক। রবিবার সচিন পাইলটের মুখ্যমন্ত্রিত্বের বিরোধিতা করে গেহলট অনুগত ৯২ জন বিধায়ক ইস্তফার দেওয়ার হুমকি দিয়ে স্পিকার সিপি যোশীর দ্বারস্থ হন। আর এই রবিবার থেকে অশোক গেহলটের কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার স্বপ্নে পেরেক পড়ে যায়।
কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতা তাঁকে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য বলেন। একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বের কথায়, যিনি নিজের রাজ্যে কংগ্রেস বিধায়কদের দ্বন্দ্ব সামলাতে পারেন না তিনি গোটা দলকে কীভাবে নেতৃত্ব দেবেন। এরপর গেহলট ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীদের এই মন্তব্যে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন থেকে তাঁর ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল হচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।