গুয়াহাটি: সঠিক সময়ে মাতৃত্ব গ্রহণ করা উচিত মহিলাদের। শনিবার এমনটাই মন্তব্য করলেন অসমের বিজেপি মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanata Biswa Sarma)। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেছেন, মহিলাদের সঠিক সময়ে মাতৃত্ব গ্রহণ করা উচিত। নয়তো একাধিক চিকিৎসাগত জটিলতা তৈরি হতে পারে। তিনি এই অনুষ্ঠান থেকে বাল্যবিবাহ ও কম বয়সে মাতৃত্ব রোধের জন্য তাঁর সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, যৌন অপরাধ রোধে কঠোর পকসো আইন এবং বাল্যবিবাহ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মাতৃত্ব রোধে কঠোর আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। এবং তা পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যেই নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন হিমন্ত। তিনি এ দিন বলেন, “আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসে হাজার হাজার স্বামীদের গ্রেফতার করা হবে। কারণে যতই বৈধভাবে বিবাহিত স্বামী হোক না কেন ১৪ বছরের নীচে কোনও কিশোরীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আইনত অপরাধ।”
ভারতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধের জন্য মেয়েদের বৈধ বয়স হল ১৮ বছর। এর নীচে কোনও কিশোরীকে বিয়ে করা আইনের চোখে অপরাধ। তিনি বলেছেন, “এবার অনেকের (যাঁরা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে করেছেন) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।” এদিকে বিয়ের বয়স নিয়ে কথা বলার সময় মাতৃত্ব নিয়েও কথা বলেন হিমন্ত। তিনি বলেন, “মেয়েদের মা হওয়ার জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করা উচিত নয়। তাতে বেশি জটিলতা বাড়তে পারে। মা হওয়ার সঠিক বয়স হল ২২ থেকে ৩০ বছর।” তিনি এরপর মুচকি হেসে বলেন, যেসব মহিলা এখনও বিয়ে করেননি তাঁদের তাড়াতাড়ি করে নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, “আমরা অপ্রাপ্তবয়স্ক মাতৃত্বের বিরুদ্ধে কথা বলছি। কিন্তু সেই একই সময়ে বলতে চাই মহিলাদের মাতৃত্বের জন্য বেশিদিন দেরি করাও ঠিক নয়, যা অনেকেই করে থাকেন…ভগবান আমাদের শরীরটাকে এমনভাবেই তৈরি করেছে যে সেখানে সবকিছুর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে।” প্রসঙ্গত, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এক ধাপ এগিয়েছে অসম সরকার। অসমের যেসব যুবক ১৪ বছরের নীচে মেয়েদের বিয়ে করবে, পকসো আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে সোমবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসমের মন্ত্রিসভা। রাজ্য়ে উচ্চ শিশু মৃত্যহার এবং প্রসবের সময় মায়ের মৃত্যুর হার কমানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হিমন্ত জানিয়েছেন, এই মৃত্যুর অন্যতম কারণই হল বাল্যবিবাহ। তাই সেই সমস্যাকেই প্রথমে উপড়ে ফেলার জন্য তৎপর অসমের প্রশাসন। তিনি আরও বলেছেন, রাজ্যে ৩১ শতাংশ বিবাহেই মেয়েরা অপ্রাপ্তবয়স্ক।