নয়া দিল্লি: রাষ্ট্রপত্নী মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে সরগরম দিল্লি। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মন্তব্য়কে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাঁকে এবং কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবি জানিয়েছেন শাসক দলের সাংসদরা। এত কিছুর মাঝেও খুশি অধীর চৌধুরী। কারণ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি যেভাবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা একজন অভিভাবকের মতোই।
‘রাষ্ট্রপত্নী’ মন্তব্য ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে কংগ্রেস সাংসদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। গতকাল সংসদ থেকে বেরনোর সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে তিনি অধীর চৌধুরীকে ক্ষমা চাইতে বলবেন কি না, জবাবে কঠোর স্বরে তিনি বলেন, “উনি (অধীর) আগেই ক্ষমা চেয়েছেন।” গতকালই জরুরি বৈঠকও ডেকেছিলেন সনিয়া গান্ধী। সেই বৈঠকে ছিলেন অধীর চৌধুরীও। দলনেত্রীকে এভাবে পাশে পেয়েই আবেগঘন হয়ে পড়েন অধীর, তিনি বলেন, “আজ আর নিজেকে অনাথ বলে মনে হচ্ছে না… আমি সনিয়া গান্ধীর মধ্যে একজন অভিভাবককে পেয়েছি।”
রাজীব চকে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে মুখ ফসকে রাষ্ট্রপতির বদলে দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে সম্বোধন করেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইচ্ছাকৃতভাবেই দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতিকে অপমান করেছেন কংগ্রেস সাংসদ, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। গতকাল এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয় লোকসভা ও রাজ্যসভা। কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির।
সংসদের বাইরে অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে এই মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি বারবার বলেছি যে মুখ ফসকে আমি ওই শব্দ বলেছিষ আমি রাষ্ট্রপতিকে অপমান করার কথা ভাবতেও পারি না। এটা একটা ভুল মাত্র। যদি রাষ্ট্রপতির খারাপ লেগে থাকে, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ওনার সঙ্গে দেখা করব এবং ক্ষমা চাইব। কিন্তু ভন্ডদের কাছে কোনও ক্ষমা চাইব না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বাঙালি। হিন্দিতে অতটাও সড়গড় নই। সেই কারণে মুখ ফসকে একবার মাত্র ওই শব্দ বলেছি। আমি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও বারংবার অনুরোধ করেছিলাম যে মুখ ফসকে এই কথা বলেছি, এটা যেন না দেখানো হয়। কিন্তু একটি চ্যানেল তা নিয়ে ইস্যু তৈরি করে। বিজেপি সংসদে আমাদের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে কথা বলতে দিতে চায় না, তাই এই ছোট বিষয়কে নিয়েই এত বড় ইস্যু তৈরি করছে।”
সনিয়া গান্ধীকেও ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানোর প্রসঙ্গে অধীর বলেন, “ওনারা (বিজেপি) চাইলে আমায় ফাঁসিতেও ঝোলাতে পারেন। কিন্তু সনিয়া গান্ধীকে কেন এই বিষয়ে টানা হচ্ছে। এমনিই দিনের পর দিন ইডি দফতরে ডেকে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে।”