নয়া দিল্লি : কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন উত্তরোত্তর নাটকীয় মোড় নিচ্ছে। তিন গান্ধীর কেউই এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কে কে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তা নিয়ে একাধিক গুঞ্জন শোনা গিয়েছে। শশী থারুর সম্প্রতি মনোনয়নের ফর্ম তুলেছিলেন। সবাইকে অবাক করে ফর্ম তুলেছেন কংগ্রেসের কোষাধক্ষ পবন বনসলও। এবার গুঞ্জন সত্যি করেই মনোনয়নের জন্য ফর্ম নিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, ‘আমি মনোনয়নের ফর্ম সংগ্রহ করতে এসেছি।’ তিনি জানিয়েছেন আগামীকাল মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি। এখনও পর্যন্ত সমীকরণ বলছে, কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে আপাতত মুখোমুখি শশী থারুর ও দিগ্বিজয় সিং। দিগ্বিজয়ের পাশাপাশি শশী থারুরও আগামীকাল শেষ দিনে মনোনয়ন জমা দেবেন। এদিকে গতকাল পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি দিগ্বিজয় সভাপতি নির্বাচনে লড়বেন কি না। তিনি গতকাল জানিয়েছিলেন, ‘আমি কারোর সঙ্গে আলোচনা করিনি। আমি হাই কম্যান্ডের থেকে কোনও অনুমতি নিইনি।’
প্রসঙ্গত, এই সভাপতি নির্বাচনের দৌড়ে সবার আগে ছিলেন অশোক গেহলট। তবে নির্বাচিত হলে তাঁর সভাপতি পদের পাশাপাশি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বহাল থাকা নিয়ে বিরোধ বাঁধে। কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি,এক পদ’ নীতি অনুযায়ী রাহুলের স্পষ্ট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে রাজি হন গেহলট। তারপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। গেহলটের উত্তরসূরি হিসেবে সচিন গেহলটকে মেনে নিতে রাজি হন না গেহলট অনুগামী বিধায়করা। রবিবার মোট ৯২ জন বিধায়ক দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে রাজস্থানের বিধানসভার স্পিকারের কাছে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দেন। ফলে সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সেই নিয়ে কংগ্রেসের হাইকম্যান্ড যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অশোক গেহলটের উপর কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছেন গান্ধীরা। তবে এই ঘটনায় নিজের যোগ অস্বীকার করে গেহলট এই পরিস্থিতির জন্য ক্ষমতা চেয়েছিলেন। আবার রাজস্থানের রাজনৈতিক সঙ্কট ঘিরে অশোক গেহলটের কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রশ্নের মুখে পড়ে।
সভাপতি নির্বাচনের জন্য দৌঁড়ে একদম প্রথমে থেকেও এখনও পর্যন্ত মনোনয়ন ফর্ম তোলেননি গেহলট। এদিকে কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতা দাবি করেছেন, গেহলট এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, যিনি নিজের রাজ্যের বিরোধই আটকাতে পারেন না সেই গেহলট একটা গোটা দল কীভাবে সামলাবেন। এদিকে এই আবহে অশোক গেহলটকে ফোন করেছিলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। আজ দিল্লিতে সনিয়া-গেহলটের বৈঠকও হওয়ার কথা। অশোক গেহলট নির্বাচনে থাকছেন না বেরিয়ে যাচ্ছেন তা জানা যাবে এই বৈঠকের পরই।