গান্ধীনগর : এ বছর ডিসেম্বরেই মোদী-শাহের রাজ্য়ে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Elections 2022) আসন্ন। নির্বাচনের আগে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনে ময়দানে নেমে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই উদ্দেশে সম্প্রতি গুজরাতে জনসভা করেন আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল (Arvind Kejriwal)। বিজেপিও খুব একটা পিছিয়ে নেই। এই আবহে কংগ্রেসের অন্দরে ফের সংঘাতের সুর। গুজরাত কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি হার্দিক প্যাটেল (Hardik Patel) সোমবার তাঁর টুইটার বায়ো থেকে কংগ্রেসের নাম মুছে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্যাটেলের নতুন টুইটার বায়োতে লেখা রয়েছে, “গর্বিত ভারতীয় দেশপ্রেমিক। সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী। উন্নত ভারতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এরপর থেকেই পুনরায় শুরু হয়েছে জল্পনা। রাজনৈতিক মহলে নয়া প্রশ্ন তাহলে কি তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন?
হার্দিকের এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই। তবে জানা গিয়েছে হার্দিক হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের ডেসক্রিপশন থেকেও দলের নাম সরিয়ে নিয়েছেন। এদিকে সম্প্রতি তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গুজবও খারিজ করেছেন। তবে তিনি যে কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষুণ্ণ তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি বলেছিলেন, “আমি রাহুল গান্ধী বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর উপর বিরক্ত নই। রাজ্য নেতৃত্বে আমি ক্ষুব্ধ। আমার মন খারাপ কেন? নির্বাচন আসছে, এমন সময়ে সৎ ও বলিষ্ঠ লোকদের নিয়ে কাজ করতে হবে। তাঁদের পদ দেওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, গুজরাতের কংগ্রেসে দ্বন্দ্ব সম্প্রতি সামনে এসেছে। কংগ্রেস নেতা হার্দিক প্যাটেল প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন যে, দলে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনও আলোচনা করা হয় না। তিনি একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্য়মের কাছে বলেছেন, “কংগ্রেসে আমার অবস্থা অনেকটা সেই নতুন বরের মতো যাঁকে জোর করে নাসবন্দি করানো হয়েছে।” দলে তাঁকে কোণঠাসা করার অভিযোগ তুলে তিনি জানিয়েছিলেন কোনও দলীয় বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয় না। এর পাশাপাশি তিনি বিজেপির প্রশংসাও করেন। তিনি গুজরাত বিজেপির বহুবার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার ও রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করার জন্য বিজেপির প্রশংসা করেন। বিজেপিকে নিয়ে তাঁর বক্তব্যই বিজেপিতে তাঁর যোগদানের জল্পনা উসকে দেয়। কিন্তু তিনি পরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না। তিনি সংবাদ সংস্থা এএনআই কে জানিয়েছেন,”মানুষ অনেক কিছু বলবে। জো বাইডেন যখন মার্কিন নির্বাচনে জিতেছিলেন, আমি তাঁর প্রশংসা করেছিলাম। কারণ তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত। কিন্তু এর মানে কি আমি বাইডেনের দলে যোগ দেব?”
উল্লেখ্য, গত পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস। পঞ্জাবের জনগণ কংগ্রেসকে পুনরায় ক্ষমতায় নিয়ে আসেনি। এর পিছনে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। গুজরাত নির্বাচনের আগে হার্দিকের দলের বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্যে কংগ্রেস এখানে দুর্বল হয়ে পড়বে বলে ধারণা রাজনৈতিক কারবারিদের।
আরও পড়ুন : India’s Fevicol Man : ‘জোড়া’ লাগাতে যাঁর জুড়ি মেলা ভার, জানুন ভারতের ‘ফেভিকল ম্যানকে’