চণ্ডীগঢ়: কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এবার অরবিন্দ কেজরীবালের ‘ফ্রি’ রাজনীতি! আপের মতো হিমাচল প্রদেশের মানুষের মন জয়ে একাধিক ‘বিনামূল্যে পরিষেবার’ প্রতিশ্রুতি দিল কংগ্রেস। আসন্ন বিধানসভার নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে কংগ্রেস জানিয়েছে, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বিনামূল্য বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। মহিলা ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে টানতে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি, সরকারে এলে রাজ্যে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের মাসিক দেড় হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। এই ঘোষণা করেছেন দলের তরফে হিমাচল প্রদেশের পর্যবেক্ষক তথা কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল।
চলতি বছর মার্চে কংগ্রেসকে পর্যদুস্ত করে পঞ্জাবে আম আদমি পার্টির বিপুল জলের পর ‘ফ্রি’ রাজনীতি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। পঞ্জাবের মানুষের মন জয়ে দিল্লির মতো বিনামূল্যে জল ও বিদ্যুতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। এমনকী দিল্লির শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মডেলকে তুলে ধরা হয়েছিল। ভোটের ফল প্রকাশের সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল, কেজরীবালের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রেখে আপ প্রার্থীদের ঢেলে ভোট দিয়েছে পঞ্জাবের জনতা।
তবে বিজেপির মুখে বারবরাই ‘ফ্রি’ রাজনীতি নিয়ে নিন্দার সুর শোনা গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের এক জনসভা থেকে এ বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছিলেন, এই ধরনের রাজনীতি উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মোদী জানিয়েছিলেন, ক্ষমতার লোভের রাজনৈতিক দলগুলি এই প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সরকারকে আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। মোদীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে আম আদমি পার্টি জানিয়েছিল, বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়ার কারণে নয় বরং দুর্নীতির কারণে রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক সংকট বৃদ্ধি পায়।
বিনামূল্যে পরিষেবার সপক্ষে কেজরীবাল বলেছিলেন, “বিনামূল্যে জল, বিদ্যুৎ দেওয়ার মধ্যে ভুল কোথায়? এরা নিজেদের বন্ধুদের ১০ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে। এই ধরনের মানুষ বিশ্বাসঘাতক এবং এদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিৎ।” কেজরীবাল মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকারে উচিৎ প্রত্যেক নাগরিককে বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুবিধা দেওয়া। এমনকী প্রবীণদের পেনশন এবং বেকারদের ভাতা দেওয়া উচিৎ বলেই মনে করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ভর্তুকির রাজনীতি নিয়ে মুখ খুলেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে নির্বাচনী প্রচারের সময় বিনামূল্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া একটি “গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা” এবং এই জাতীয় অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি সংস্থার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছিল শীর্ষ আদালত।