নয়া দিল্লি: কয়েকদিন আগেই হাতছাড়া হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। মহারাষ্ট্রের পার্শ্ববর্তী রাজ্য গোয়ার কংগ্রেস (Goa Assembly) বিধায়কদের দলবদলের জল্পনার মধ্যেই নড়েচড়ে বসল শীর্ষনেতৃত্ব। সংকট পরিস্থিতি কাটাতে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। রবিবার দলের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিককে দ্রুত গোয়া যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গোয়াতে পৌঁছেই যাবতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন সনিয়া। দলেরই দুই নেতার বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে যোগসাজোশ করে পরিষদীয় দলকে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। গোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক মাইকেল লোবো এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগম্বর কামাত শতাব্দীপ্রাচীন দলকে ভেঙে বিজেপি হাত শক্ত করতে চাইছেন বলে মনে করছে রাজ্য কংগ্রেসের একটা বড় অংশ। অখিল ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল রবিবার রাতে টুইট করে বলেন, “কংগ্রেস সভানেত্রী দ্রুত মুকুল ওয়াসনিককে গোয়াতে গিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।”
ইতিমধ্যেই মাইকেল লোবোকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। গোয়া কংগ্রেসের ডেস্ক ইনচার্জ দীনেশ গুন্ডুরাও রবিবার সন্ধেয় লোবোকে বিরোধী দলনেতা পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। বেশ কয়েকদিন ধরেই গোয়ার রাজনীতিতে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল যে মাইকেল লোবো বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মহারাষ্ট্রে বিধান পরিষদ সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাতারাতি যেভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদল হয়েছে তাতে প্রতিবেশী রাজ্যে গোয়াতেও কংগ্রেস বিধায়কদের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা আরও জোরাল হয়েছে।
গোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশই কংগ্রেসের জন্য কঠিন হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় কংগ্রেসে ১১ জন বিধায়ক রয়েছেন। অন্য়দিকে এমজিপি ও নির্দলদের নিয়ে বিজেপির জোট সরকারে ২৫ জন বিধায়ক রয়েছেন। সূত্রের খবর, ১১ জন বিধায়কের মধ্যে ৮ জনকে ‘টার্গেট’ করেছে বিজেপি। সূত্রের দাবি, এই তালিকায় নাম রয়েছে, দিগম্বর কামাত, মাইকেল লোবো, ডেলাইলা লোবো, কেদার নায়েক এবং রাজেশ ফলদেসাইয়ের। বাকি তিন বিধায়ককে দলে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশে মতে গোয়াতে বিজেপি সরকার থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি ভোটের কথা মাথায় রেখেই কংগ্রেস বিধায়কদের দলে টানতে আগ্রহী গেরুয়া শিবির। বিধানসভা নির্বাচনের পরও বিজেপি সর্ববৃহৎ দল হলেও সংখ্যা গরিষ্ঠতা ছিল না। পরবর্তীকালে মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি এবং নির্দলদের সমর্থনে সরকার তৈরি করেছিল বিজেপি। তবে গোয়া কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের আগে গুজব ছড়িয়ে দিতেই এই ধরনের কাজ করা হচ্ছে। আগামী দিনে গোয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটাই এখন দেখার।